পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ! মুর্শিদাবাদের বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর সিআইডি তদন্তের নির্দেশ হাই কোর্টের

মুর্শিদাবাদের বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করবেন এডিজি সিআইডি। এমনই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। তিনি আরও জানান, অবিলম্বে তদন্তের যাবতীয় নথি সিআইডির হাতে তুলে দিতে হবে।

নদিয়ার ধুবুলিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা নিমাই বিশ্বাসের মেয়ে বান্টি বিশ্বাসের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের আয়েশবাগান এলাকার বাসিন্দা মিঠুন দে-র বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে নানা কারণে টাকা চেয়ে জন্য অত্যাচার করা হতো বান্টিকে। মৃতের পরিবারের আরও অভিযোগ, পণ দিতে অস্বীকার করায় তাদের মেয়ে খুন করেছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে মিঠুনের বাড়িতে গেলে তাদের আটকে রাখা হয়। এমনকি, পুলিশে অভিযোগ জানালে উল্টে বান্টির বাপের বাড়ির লোকজনদেরই গ্রেফতার করা হয়। তার পরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় মৃতার পরিবার।

মামলাকারীদের অভিযোগ, ব্যবসায়িক ক্ষতি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত প্রয়োজন, নানা অছিলায় বিয়ের পর থেকেই বউকে চাপ দিয়ে তাঁর বাপের বাড়ি থেকে টাকা আদায় করতেন মিঠুন। এক সময় জামাইয়ের আবদার আর মেটাতে পারেননি নিমাই। তখন থেকেই বউয়ের উপর চরম অত্যাচার শুরু হয় বলে অভিযোগ। গত ৭ এপ্রিল তাঁর উপর অত্যাচারের কথা বাড়িতেও জানিয়েছিলেন বান্টি।

এরপর ১০ এপ্রিল নিমাইবাবুকে ফোন করে মিঠুন জানান, তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অভিযোগ, তড়িঘড়ি সেখানে ছুটে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি। মেয়ের মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি পরিবারের লোকজনদের। এমনকি ময়নাতদন্তের সময় মৃতদেহ দেখতে চাওয়ায় মৃতের পরিবারের সদস্যদের আটক করে পুলিশ।

শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, এখন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে, শাসানি দিয়ে ফোন করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মামলা তুলে না নিলে ফল ভাল হবে না। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়নি। এমনকি, বান্টির শ্বশুরবাড়িতে সিসি ক্যামেরা থাকলেও তাঁর ফুটেজ সংগ্রহ করেনি পুলিশ।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের আইনজীবীর কাছে যাবতীয় বৃত্তান্ত জানতে চান বিচারপতি সিংহ। কিন্তু বিচারপতির প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি রাজ্যের আইনজীবী। এর পরই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি সিংহ। নির্দেশে বিচারপতি জানান, অবিলম্বে পুলিশকে মামলার সমস্ত নথি সিআইডির কাছে হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে কোনও শাসানিমূলক ফোন পেলে মৃতার পরিবারকে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.