রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নিজের জামিনের স্বপক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এবার নিশানা করলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আলিপুর আদালত থেকে বেরোনোর সময় পার্থ দাবি করেছেন, নিয়োগ সংক্রান্ত সব রিপোর্ট যেত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। একই সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে “আমার বস” বলেও উল্লেখ করেছেন পার্থ।
নিজের জামিনের স্বপক্ষে আগেও আদালতে সাওয়াল করতে দেখা গেছে পার্থকে। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। এবার আরো একধাপ এগিয়ে পার্থর দাবি, এসএসসি বোর্ড চালায়। এখানে মন্ত্রীর কোনো ভূমিকা ছিল না। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে চান। তাই তাকে জামিন দেওয়া হোক।
এরপরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব দাবি করেন, বিভিন্ন দপ্তরের সচিবরা মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট করেন। সেই রিপোর্ট যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে আমার কোনো ভূমিকা নেই।
প্রশাসনিক মহলেরও অবশ্য ব্যাখ্যা যে কোনো নিয়োগের ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি দরকার। কিন্তু একইসঙ্গে
পার্থবাবুর ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে পাহাড় প্রমাণ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় তারও এই দুর্নীতিতে থাকার প্রমাণ একেবারে স্পষ্ট। তাহলে কি এখন নিজের দিক থেকে তদন্তের অভিমুখ ঘুরানোর চেষ্টা করছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী? নাকি এবার বিরোধীদের দাবি মতো নিয়োগ দুর্নীতির জটের রহস্য উদ্ঘাটন হতে চলেছে?
সামনেই দুর্গাপুজো, দীর্ঘ দিন পরিবারের থেকে দূরে। এবার তাকে জামিন দেওয়া হোক বলে আদালতের বিচারকের কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছেন পার্থ। তার দাবি, তদন্তের নামে গত এক বছর ধরে তাকে আটকে রাখা হলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো তথ্যপ্রমাণ আদালতে হাজির করতে পারেনি।
একদিকে দলনেত্রীকে নিশানা অন্যদিকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আমার বস বলে সম্মোধন সবটাই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।