নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, যথা সময়েই নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে তিনি এও দাবি করেন যে, কমিশন সব সময় স্বচ্ছতার পক্ষেই।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘ক্ষতিকারক’ আখ্যা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে (এসবিআই) নির্দেশ দেয় অবিলম্বে নির্বাচনী বন্ড বিক্রি বন্ধ করার জন্য। পাশাপাশি, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কতগুলি নির্বাচনী বন্ড বিক্রি হয়েছে, কোন কোন রাজনৈতিক দল নির্বাচনী বন্ড থেকে টাকা পেয়েছে— সেই সংক্রান্ত সব তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। ৬ মার্চের মধ্যে সেই তথ্য তুলে দেওয়ার কথা এসবিআইকে বলেছিল শীর্ষ আদালত।
তবে এই নির্দেশ কার্যকর করতে এসবিআই সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানায়। সোমবার সেই মামলায় এসবিআইয়ের আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাঙ্কের উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন ছিল, “গত ২৬ দিন ধরে আপনারা কী করছিলেন? আপনাদের আবেদনে এই নিয়ে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি।” শীর্ষ আদালত জানায়, কোনও ভাবে আর অতিরিক্ত সময় দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আরও জানিয়েছিল, আগামী শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৫টার মধ্যে তাদের সরকারি ওয়েবসাইটে বন্ড-তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতোই মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচনী বন্ডের যাবতীয় তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেয় এসবিআই। বর্তমানে রাজীব জম্মু ও কাশ্মীরে রয়েছেন। সেখানকার নির্বাচনী প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতেই গিয়েছেন তিনি। শ্রীনগরে সাংবাদিক সম্মেলনের সময়ই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে রাজীব বলেন, কমিশন সব সময় স্বচ্ছতার পক্ষে। এসবিআই সময়মতোই সব তথ্য আমাদের দিয়েছে। আমরা তা পেয়েছি। আমরাও সময়মতোই তা প্রকাশ করব।’’
অন্য দিকে, বুধবার এসবিআই আদালতে হলফনামা দিয়ে জানায়, ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিতে মোট ২২ হাজার ২১৭টি নির্বাচনী বন্ড কেনা হয়েছে। তার মধ্যে ২২ হাজার ৩০টি বন্ডই ভাঙিয়ে নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি! বাকি নির্বাচনী বন্ডগুলির ভাঙানো না হওয়ায় সেগুলি প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে জমা পড়েছে।