অপারেশন প্রঘাতে অসম পুলিশ তিন দিন আগে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপরে তল্লাশি চালিয়ে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আব্বাস আলি এবং মিনারুল শেখকে। তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইলের সিম কার্ড ও নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট দুই জঙ্গি মডিউল তৈরির ছক কষছিল। কম বয়সি ছেলে- মেয়েদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ করতেন দু’জন। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি সুপ্রতিম সরকার।
গোপন সূত্রে অসম পুলিশের এসটিএফ- এর কাছে খবর পৌঁছায়, অশান্ত বাংলাদেশ থেকে নাশকতা চালাতে বেশ কয়েকজন জঙ্গি ভারতে ঢুকেছে। এরপরই অপারেশন প্রঘাত শুরু হয়। বাংলা, কেরল, অসমে অভিযান চালায় অসম পুলিশের এসটিএফ। তাদের জালে ধরা পড়ে বেশ কয়েকজন জঙ্গি। অসম পুলিশের এসটিএফ সূত্রে খবর, সদ্য জেলমুক্ত আনসারউল্লাহ বাংলার প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানের নির্দেশেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছে জঙ্গিরা।
ইতিমধ্যেই অসম পুলিশ শাদরাদি নামে একজনকে গ্রেফতার করে। সে জেএমবি সংগঠন সম্প্রসারণ এবং এলাকায় নতুন নিয়োগের মাস্টার মাইন্ড ছিল। অসম এবং বাংলায় স্লিপার সেল তৈরির পরিকল্পনা ছিল ধৃত জঙ্গির। জেএমবির অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে বাংলা ও কেরল সফর করে সে। জানাগেছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হরিহরপাড়া থেকে দু’জনের খোঁজ মিলেছে।
হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা আব্বাস আলি এবং রুকুনপুরে বাস মিনারুল শেখকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় বুধবার। বারুইপাড়া এলাকায় মাদ্রাসা খুলেছিল আব্বাস আলি। সেখানে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের একাই পড়াতো আব্বাস। মিনারুল ট্রাক্টর, জলের কল এবং বিভিন্ন গাড়ি সারাতে সিদ্ধহস্ত ছিল। তাদের কাছ থেকে সন্দেহজনক নানা নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ধৃত দুই জঙ্গিকে জেরার পর শুক্রবার কলকাতা পুলিশের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। ধৃত ওই দুই যুবকের কাছ থেকে মোবাইলের সিম কার্ড, পেনড্রাইভ, পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য অসম পুলিশ নিয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে অসমে পাড়ি দিয়েছে রাজ্য পুলিশের একটি টিমও। সেখান থেকে পাওয়া আরো তথ্যের ভিত্তিতে জঙ্গি গোষ্ঠীকে বাংলায় শাখা প্রশাখা বিস্তারে বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য পুলিশ।
উত্তপ্ত বাংলাদেশে ক্রমশ মৌলবাদী ও কট্টরপন্থীদের দাপট বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতেই ২ জঙ্গি গ্রেপ্তারে বাংলার নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ বাড়ছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।