মারা গেলেন ভানু বাগ। কটকের রুদ্র হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ মৃত্যু হয় এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুর। মঙ্গলবার এগরার বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ভানুও জখম হন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থাতেই তিনি ওড়িশা পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে সূত্রের খবর। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে ভানুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। ভানুর দেহ পড়শি রাজ্য থেকে আনতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যপুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভানুর শেষকৃত্যের পর তাঁর ছেলেকে হেফাজতে নেওয়া হবে। এগরা বিস্ফোরণ মামলায় ভানু, তাঁর পুত্র ও ভাইপো— তিনজনকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে মামলা দায়ের হয়েছিল। ভানুর মৃত্যু হওয়ায় বর্তমানে এই মামলার মূল অভিযুক্ত তাঁর ছেলে ও ভাইপো। ভাইপোকে ইতিমধ্যে ৮ দিনের সিআইডি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে এগরার বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ প্রাণ কেড়েছিল ৮ জনের। ভানুর মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিস্ফোরণের ঘটনার পর রাত ২টো নাগাদ ভানুকে হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর আত্মীয়েরা। সেই সময় তাঁর মাথা থেকে পা পর্যন্ত সারা শরীর দগ্ধ ছিল। শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। ভানুর আত্মীয়েরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান, তাঁদের বাড়ি ওড়িশার বালেশ্বরে। পরিচয়পত্র হিসাবে বালেশ্বরের ঠিকানা থাকা একটি আধার কার্ডও দেখানো হয়। দগ্ধ হওয়ার কারণ হিসাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল, স্থানীয় একটি অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্নার তদারকি করছিলেন ভানু। সে খানেই সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনি জখম হয়েছেন। এর পর হাসপাতালে ভানুর চিকিৎসা শুরু হয়। তাঁর সারা শরীর কলাপাতায় মুড়ে হাসপাতালে রাখা ছিল। ওড়িশার সেই হাসপাতালেই বৃহস্পতিবার সিআইডির জালে পড়েন ভানু। গ্রেফতার হন তাঁর ছেলে এবং ভাইপোও।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল। ভানুর বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বেশ কয়েকটি দেহ। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন ভানু।
এগরা বিস্ফোরণকাণ্ড নিয়ে রাজ্য জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার থেকেই। বিস্ফোরণের পর থেকে আতঙ্ক, হতাশা গ্রাস করেছিল যে গ্রামকে, সেখানেও হতাশা অচিরেই বদলে যায় ক্ষোভ আর কৌতূহলে। সেই ক্ষোভ গিয়ে পড়ে পুলিশ এবং শাসক তৃণমূলের নেতানেত্রীদের উপরেও! এই বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।