আচরণের ‘অগ্নিপরীক্ষা’য় পাস করতে হবে অগ্নিবীরদের। অগ্নিপথে নিয়োগের আগে মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে, তারা কখনও কোনও বিক্ষোভে অংশ নেননি। কোনওরকম তাণ্ডবে জড়িত ছিলেন না। সেই বক্তব্যের পুলিশি যাচাই হলে তবেই আগামী চার বছরের জন্য বাহিনীর অংশ হওয়ার সুযোগ পাবেন আবেদনকারীরা। তা না হলে নয়।
রবিবার অগ্নিপথ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সেনাবিভাগের এক শীর্ষকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল পুরী। অগ্নিপথে কী প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হবে, সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অনিল প্রথমেই স্পষ্ট করে দেন, বিক্ষোভকারী বা বিশৃঙ্খলাসৃষ্টিকারীদের স্থান নেই সেনাাহিনীতে। ‘‘প্রত্যেক আবেদনকারীকে মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে, তাঁরা কোনও বিক্ষোভের অংশ ছিলেন না। পুরনো পুলিশি রেকর্ডের যাচাইও হবে পুরোমাত্রায়।’’ যদিও সেনা কর্তা যখন এই ঘোষণা করছেন, তখনও কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্প প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল দেশ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই বিক্ষোভের অংশ তরুণ প্রজন্মই।
গত সপ্তাহেই সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নতুন প্রকল্প অগ্নিপথের ঘোষণা করেছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। চার বছরের জন্য দেশের সাড়ে ১৭-২৩ বছর বয়সি তরুণদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হবে এই প্রকল্পে। তারপর থেকেই অগ্নিপথ প্রকল্পের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পথে নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই প্রকল্পে দেশের তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা না দিয়েই যুদ্ধক্ষেত্রে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যদিও রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওই কর্তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যা-ই ঘটুক তাঁরা অগ্নিপথ নিয়ে পিছু হঠবেন না। প্রকল্প প্রত্যাহার করবেন না। বরং অগ্নিপথে কবে, কীভাবে নিয়াগ প্রক্রিয়া শুরু হবে, কবে অনলাইন পরীক্ষা হবে তার বিশদ রবিবারই জানিয়ে দিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল।
সাংবাদিক বৈঠকে অনিল বলেন, ‘‘আপাতত অগ্নিপথে ৪৬ হাজার আবেদনকারীকে সুযোগ দেওয়া হবে। তবে পরে এই সংখ্যা বাড়বে। পর্যায়ক্রমে এক লক্ষ ২৫ হাজার অগ্নিবীরের শূন্যপদ তৈরি হবে সেনাবাহিনীতে।’’
আপাতত ২৪ জুন থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার নিয়োগ প্রথম দফার প্রক্রিয়া শুরু হবে অনলাইনে, ২৪ জুলাই অনলাইন পরীক্ষার ‘ফেজ ওয়ান’ শুরু হওয়ার কথা। ডিসেম্বরের শেষে প্রথম দফার নিয়োগ শুরু হবে। ৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ। অন্য দিকে নৌ সেনা বাহিনীর নতুন নিয়োগের প্রথম ব্যাচের সদস্যরা ২১ নভেম্বর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠী। তিনি জানিয়েছেন, নৌবাহিনীতে মেয়েদেরও নিয়োগ করা হবে ‘অগ্নিবীর’ হিসেবে।