ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া যে কোনও ক্রিকেটারের কাছে আরও কঠিন হতে চলেছে। আর যাঁরা সুযোগ পেয়েছেন বা পাবেন, তাঁদের জায়গা ধরে রাখাও ততটাই কঠিন হচ্ছে। কারণ, জাতীয় নির্বাচক কমিটির মাথায় বসেছেন অজিত আগরকর। বড় বড় ক্রিকেটারদের ছেঁটে ফেলার ইতিহাস আছে তাঁর। তবে তাঁর নিজের জায়গা ধরে রাখাও বেশ কঠিন। কারণ, বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে তাঁকেও ছেঁটে ফেলা হয়েছিল।
নির্বাচক হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে আগরকরের। মুম্বইয়ের প্রধান নির্বাচক ছিলেন তিনি। সেখানে একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের জন্য চাকরি হারাতে হয়েছিল তাঁকে। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ছিল তাঁর কাছে শেষ কথা। নাম দেখে দল নির্বাচনের পক্ষপাতী ছিলেন না তিনি। তাই সূর্যকুমার যাদব, ধবল কুলকার্নি, অখিল হারওয়াদকর, আদিত্য তারে, আরমান জাফরের মতো মুম্বই ক্রিকেটের বড় নামদের অবলীলায় দল থেকে বাদ দিয়েছিলেন বিভিন্ন সময়। একের পর এক তাঁর কঠোর সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। মুম্বই ক্রিকেটে তৈরি হয়েছিল ক্ষোভ।
আগরকরের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির সিদ্ধান্ত বার বার অস্বস্তিতে ফেলেছিল মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (এমসিএ) কর্তাদেরও। পরিস্থিতি সামলাতে আগরকরকে ইস্তফা দেওয়ার পরামর্শ দেবেন বলে ভেবেছিলেন মুম্বইয়ের কয়েক জন ক্রিকেট কর্তা। কিন্তু দল নির্বাচন ঘিরে পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছিল যে সেই সময়টুকুও তাঁকে দেওয়া হয়নি শেষ পর্যন্ত। আগরকর-সহ গোটা নির্বাচক কমিটিকেই বরখাস্ত করতে বাধ্য হয়েছিল এমসিএ।
সেই আগরকরই এ বার রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের প্রধান নির্বাচক। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি দিল্লি ক্যাপিটালসের সহকারী কোচের চাকরি ছেড়ে প্রধান নির্বাচক হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। আবেদনকারীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতার নিরিখে অনেক এগিয়ে ছিলেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অলরাউন্ডার। স্বভাবতই তাঁর প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পাওয়া এক রকম নিশ্চিত ছিল। মঙ্গলবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আগরকরের নাম প্রধান নির্বাচক হিসাবে ঘোষণা করার পর থেকে শুরু হয়েছে জল্পনা। মুম্বই এবং ভারতীয় ক্রিকেট কর্তাদের একাংশ মনে করছেন, আগরকরকে আবার সেই কঠোর মনোভাবে দেখা গেলে সমস্যা পড়তে পারেন ভারতীয় দলের একাধিক সদস্য।
আগামী এক দিনের বিশ্বকাপের পর ভারতীয় দলে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রদবদল হতে পারে। তরুণ ক্রিকেটারদের বেশি করে সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারেরা পারফরম্যান্স করতে না পারলে সমস্যায় পড়তে পারেন। এমনই মনে করেছেন কর্তাদের একাংশ। সূত্রের খবর, সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলেই আগরকরকে নির্বাচক প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অতীত সাফল্যের উপর ভর করে জাতীয় দলে ম্যাচের পর ম্যাচ খেলে যাওয়ার দিন এ বার শেষ করতে চায় ভারতীয় বোর্ড। আগরকর ২৬টি টেস্ট এবং ১৯১টি এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। তিনটি বিশ্বকাপের দলে ছিলেন তিনি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন।