ফের শালতোড়ায় দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই বিক্ষোভে বিজেপি কর্মীরা

 বাঁকুড়ার পর শালতোড়া, দলীয় সাংসদদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই বিক্ষোভ বিজেপি কর্মীদের। শালতোড়ায় ঘটে যাওয়া এই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক মহলে।

বাঁকুড়া লোকসভার শালতোড়া ব্লকে দলের একাংশ সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকারের বদল চেয়ে দলের ব্লক কার্যালয়ের সামনে গঙ্গাজলঘাঁটি- পুরুলিয়া রাস্তায় রীতিমতো টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন দলীয় কর্মীরা। নতুন ব্লক কমিটি বা মন্ডল কমিটিতে সভাপতির বদলকে কেন্দ্র করেই মূলতঃ বিক্ষোভের সূত্রপাত। বিক্ষোভকারীদের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর মন্ডল কমিটিতে রদবদল করা হচ্ছে। কিন্তু সাংসদ এবং বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা না করেই নিজেদের খেয়াল খুশি মতো সব করছেন। শালতোড়া মন্ডল-১ এর সভাপতি ছিলেন উজ্জ্বল পরামানিক এবং মন্ডল-২ এর সভাপতি ছিলেন প্রদীপ মাজি। উজ্জ্বল পরামানিককে সরিয়ে অপূর্ব নন্দীকে মন্ডল-১ এর সভাপতি করা হয়। এতেই আগুনে ঘি পড়ে। মন্ডল সভাপতি বদলে ক্ষুব্ধ একদল কর্মী দলের কিষাণ মোর্চার জেলা সহ-সভাপতি রাহুল গাঙ্গুলির নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা সাংসদ সুভাষ সরকার ও জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মন্ডলের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে থাকে।

রাহুল গাঙ্গুলি বলেন, এখন সুভাষ সরকারই বাঁকুড়া জেলা সংগঠনের শেষ কথা। তিনি দলের সংগঠনকে একেবারে শেষ করে দিলেন। এখন দেখছি সংগঠনের রদবদল নয়, সাংসদ সুভাষ সরকারেরই বদল চাই। তা না হলে সামনের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া বিজেপি শূন্য হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে বিজেপির বাঁকুড়া জেলা কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারকে তালাবন্দি করে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন তারই দলের একাংশ কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে তিনি উদ্ধার পান। ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার ও জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মন্ডলের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হল বিজেপি কর্মীদেরই একাংশ। বাঁকুড়ার পর শালতোড়ায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় রীতিমত অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। তৃণমূলের কটাক্ষ এই ছবিই প্রমাণ করছে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কতটা গভীরে। তৃণমূলের শালতোড়া ব্লক সভাপতি সন্তোষ মন্ডল বলেন, ওদের দলেরই সাংসদ ও বিধায়ক। কিন্তু ওরা দলের লোকের পাশে নেই তো মানুষের পাশে কি করে দাঁড়াবেন।

লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বাঁকুড়া জেলাজুড়ে প্রকট হচ্ছে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল। প্রকট হচ্ছে সাংসদ ও জেলা সভাপতির উপর নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ। তাদের দাবি, দল ও সংগঠন চালনার ক্ষেত্রে সুভাষ সরকার ও সুনীল রুদ্র মন্ডল একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। সুভাষ সরকারের তালাবন্দির দিনই হেনস্থা ও নিগৃহীত হতে হয় সুনীলরুদ্র মন্ডলকেও। এদিনও শ্লোগান ওঠে সুভাষ সরকার ও সুনীলরুদ্র মন্ডল মুর্দাবাদ। জেলাজুড়ে একের পর এক এরকম ঘটনা ঘটতে থাকলে দলের পরিণতি কি হবে তা নিয়ে চিন্তায় দলীয় নেতৃত্ব।

এবিষয়ে সাংসদ ও জেলা সভাপতির কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউরি বলেন, কি হয়েছে তা নিয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। বিক্ষোভকারীরা কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন কিনা তাও জেলা ও রাজ্য কমিটি তদন্ত করে দেখবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.