ধর্ষণের পর গলায় ছুরির কোপ, রক্তমাখা হাতে ধর্ষকের নাম লিখে চিনিয়ে দিল কিশোরী

পুজোর দিনে পরনের প্যান্ট গলায় চেপে হেঁটে চলেছে বিবস্ত্র এক কিশোরী। দূর থেকে এক ঝলক দেখেই চোখ নামিয়ে নিয়েছিলেন দোকানদার। পাশে দাঁড়ানো লোকটি আন্দাজে বলেছিলেন, মেয়েটি সম্ভবত মানসিক ভারসাম্যহীন এক পরিচিতা।

তবু মনটা আনচান করছিল অসমের কাছাড় জেলার সেই দোকানদারের। তাঁর মেয়েটা সিনেমা দেখতে বেরিয়েছিল। সবাই বাড়ি ফিরলেও সে তখনও আসেনি। দু’-এক জনের কাছে জেনেছিলেন, সঞ্জয় তেলি নামে এক যুবকের সঙ্গে শিলচর শহরে পুজো দেখতে গিয়েছে সে। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই নিজের কাজ করছিলেন। হঠাৎ সেখানে হাজির তাঁর ভাই। জানালেন, মেয়ে ফিরেছে। এখনই বাড়ি যেতে হবে। একছুটে বাড়ি ফিরে বাবা দেখলেন, মেয়ে পড়ে আছে। গায়ে একটা কাপড় জড়ানো। নিমেষে বুঝতে পারেন, একটু আগে রাস্তায় নিজের মেয়েকেই হেঁটে যেতে দেখেছিলেন তিনি।

কী হয়েছিল? পরিবারের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, জিজ্ঞাসা করতে রক্তমাখা হাতে মেয়েটি লিখে জানায়, মহাষ্টমীর রাতে সঞ্জয় তাকে ধর্ষণ করেছিল। তার পর ছুরি দিয়ে তার গলার অনেকটা কেটে দেয়। গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। আর কিছু মনে নেই তার। কিশোরী আরও লেখে, ‘‘আজ (নবমীর দিন) সকালে আমারজ্ঞান ফেরে। দেখি আমি বস্তাবন্দি। চিৎকার করতে চেয়েছি, গলা দিয়ে আওয়াজ বার হয়নি। চেষ্টা করেছি আঙুল বার করে বস্তা ছেঁড়ার। দাঁত দিয়েও কেটেছি খানিকটা। পরে কোনও ক্রমে হাত বার করি। বস্তার মুখ খুলে বেরিয়ে আসি।’’

গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসক মেয়েটির অবস্থা দেখেই তাকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে পাঠান। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন সে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মেয়েটির গলায় এক বার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তরল খাবার টিউবের সাহায্যে খাওয়ানো হচ্ছে তাকে। ধর্ষণের তদন্তে নমুনা সংগ্রহ করে মুম্বইয়ে পাঠানো হয়েছে। দু’তিন দিনে তার রিপোর্ট আসার কথা।

পুলিশ মেয়েটির লেখা পড়ে সঞ্জয় তেলিকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, সে দোষ স্বীকার করেছে। চা বাগানের ঘন জঙ্গলে ওই যুবককে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে ছুরিটি উদ্ধার করা হয়। কাছেই পড়েছিল বস্তাটি। তার মধ্যে ছিল কিশোরীর পোশাক। কাছাড়ের বিভিন্ন সংস্থা এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে সরব হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.