মনোনয়ন জমার প্রথম পাঁচ দিনে হিংসার ঘটনাক্রম দেখে প্রাথমিক ভাবে ‘হুঁশিয়ারি’ই দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু মনোনয়নের শেষবেলায় যে ভাবে রক্ত ঝরল, তাতে সেই ‘হুঁশিয়ারি’ বদলে গিয়েছে ‘নির্দেশে’। উচ্চ আদালত রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, এ বার কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। হাই কোর্ট সেখানেই থেমে থাকেনি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, উত্তর দিনাজপুরের চোপ়ড়ার হিংসা এবং উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে বিরোধী প্রার্থীদের বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তার প্রেক্ষিতে ‘চাপ বাড়িয়ে’ রাজ্যের কাছে ‘ব্যাখ্যা’ও চাইল আদালত।
মনোনয়নের শেষ দিনে কয়েকটি জায়গায় লাগামহীন হিংসার সাক্ষী থেকেছে বাংলা। দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হতে দেখা গিয়েছে কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-২ ব্লককে। পুলিশের সামনেই অবাধে চলেছে যাবতীয় সন্ত্রাস। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছে। গুলি চলেছে। রক্ত ঝরেছে। জ্বলেছে দোকানপাট! চোপড়াতেও রক্তপাত ঘটেছে। এই সব ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজ্যের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে হাই কোর্ট। মঙ্গলবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতেও বলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, স্পর্শকাতর এলাকা সংক্রান্ত মামলার রায়ের কিছু অংশ পুনর্বিবেচনার যে আর্জি রাজ্য সরকার হাই কোর্টে জানিয়েছিল, শুক্রবার তা-ও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন।
বসিরহাটের বেশ কয়েক জন বিজেপি প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছিল হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলারও শুনানি হয়। আদালতের নির্দেশ মেনে পুলিশকে সঙ্গে নিয়েও বসিরহাটের যে সব বিজেপি প্রার্থীরা বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের শুক্রবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। বিচারপতি অমৃতা সিন্হা নির্দেশ দেন, যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে বাধা পেয়েছেন, শুক্রবার তাঁদের পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে আবার নিয়ে যাওয়া হবে। সব প্রার্থীর মনোনয়নের ব্যবস্থা করতে হবে বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপারকে।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার ভাঙড়-২ ব্লকের যে এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল মনোনয়নকে কেন্দ্র করে, কাঁঠালিয়ার সেই বিজয়গঞ্জ বাজারে যান রাজ্যপাল। সেখানে স্থানীয় মানুষ, ব্যবসায়ী এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বৈঠক করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গেও। ঘণ্টাতিনেক সেখানে থেকে ফেরার সময় অশান্তির ঘটনা নিয়ে কড়া বার্তাও দিয়েছেন রাজ্যপাল। ঘটনাচক্রে, তার কিছু পরেই ওই জেলার নামখানায় তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির সভা থেকে ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
রাজ্যের ব্যাখ্যা চাইল কোর্ট
মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ রাজ্য পুলিশ। প্রার্থীদের পুলিশি পাহারা দিয়ে মনোননয়ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার যে নির্দেশ হাই কোর্ট দিয়েছিল, তা-ও মানা হল না। এমন ঘটনা ঘটলে উপযুক্ত ভাবে তদন্ত করে দেখতে হবে। শুক্রবার এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মান্থা নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিরোধী প্রার্থীদের পাহারা (এসকর্ট) দিয়ে মনোনয়ন কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে পুলিশকে। মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, পুলিশি পাহারার মধ্যেই এক জনকে গুলি করে মারা হয়েছে। কয়েক জন আক্রান্ত। তাঁর প্রশ্ন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কী ভাবে হামলা হল? এ প্রসঙ্গেই বিচারপতির নির্দেশ, মামলাকারীরা যে সব অভিযোগ করেছেন, তা নিয়ে রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে হবে। জানাতে হবে, হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন ওই প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারলেন না। রাজ্যকে আরও জানাতে হবে, আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও যে পুলিশকর্মীরা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ করা হবে না! উল্লেখ্য, মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করেই বৃহস্পতিবার কাঁঠালিয়া মোড়ে তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। দুপুর ৩টেয় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও চলতে থাকে অশান্তি। চার দিকে বোমাবাজি, গুলিবৃষ্টি চলে। আইএসএফের অভিযোগ, তাদের ৮২ জন প্রার্থী যাতে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন, সেই নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। ভাঙড় এবং কাশীপুর থানা থেকে পুলিশ তাঁদের পাহারা (এসকর্ট) দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলা হয় শোনপুর বাজারের কাছে। বোমা-গুলি চলে। তাতেই আইএসএফ কর্মী মইনউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে তিনি মারা যান বলে দাবি করে আইএসএফ। অন্য দিকে, তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার দাবি, তৃণমূল কর্মী রশিদ মোল্লাও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। তিনি জীবনতলার বাসিন্দা। তাঁর শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে বলে তৃণমূলের দাবি। চোপড়াতেও বাম-কংগ্রেস কর্মীরা মিছিল করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চলে বলে অভিযোগ উঠেছে। গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, গুলিতে এক জন সিপিএম কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েক জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, চোপড়ায় কারও মৃত্যু হয়নি। এই সব ঘটনা নিয়ে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থা রাজ্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
পুনর্বিবেচনার আর্জি প্রত্যাহার
মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে এলাকাগুলিকে স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে, সেখানে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিরোধীদের জনস্বার্থ মামলায় হাই কোর্টের এই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে বৃহস্পতিবার আদালতে গিয়েছিলেন রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্য ছাড়াও কমিশন এবং বিরোধী দল বিজেপি এ নিয়ে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়। প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে কল্যাণ বলেন, ‘‘সাতটি স্পর্শকাতর জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু স্পর্শকাতর এলাকাই এখনও চিহ্নিত হয়নি। তাই এই রায় পুনর্বিবেচনা করা হোক।’’ কমিশনও জানিয়ে দেয়, তারা এখনও স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করেনি। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। এর পর বৃহস্পতিবারই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্যের সব এলাকাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্দেশ কার্যকরেরও নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। তার প্রেক্ষিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ জানান, বিরোধিতা নয়, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনেই চলবেন তিনি। রাজীব বলেন, ‘‘হাই কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে তা কার্যকর করব।’’ পরে শুক্রবার সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি প্রত্যাহার করে নেয় রাজ্য।
শুক্রবারেও মনোনয়নের নির্দেশ
বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। মনোনয়ন জমা দিতে অসুবিধা হচ্ছে বলে বিচারপতি মান্থার বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, যে প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তাঁদের পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কেন্দ্রে। কিন্তু তার পরেও বসিরহাটের চারটি ব্লকে বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ ওঠে। শুক্রবার এই অভিযোগে আবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। বিচারপতি অমৃতা সিন্হার বেঞ্চে বিজেপির আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাই কোর্টের নির্দেশে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েও মনোনয়ন দেওয়া যায়নি। তাই মনোনয়নের দিন বাড়িয়ে সময় দেওয়া হোক।’’ এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রার্থীদের মনোনয়নের দিন বাড়ানো নিয়ে কমিশনের অবস্থান জানতে চান বিচারপতি। পরে দুপুরে শুনানির পর বিচারপতি নির্দেশ দেন, ওই প্রার্থীরা শুক্রবার বিকেল ৪টের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন। তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার। বিচারপতি বলেন, ‘‘সময় নেই! তাই নির্দেশনামার জন্য অপেক্ষা করার দরকার নেই। আদালতে শুনানির ভার্চুয়াল লিঙ্ক রাজ্য নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। এই লিঙ্কে নির্দেশ শুনেই পদক্ষেপ করতে হবে।’’ হাইকোর্টের নির্দেশের পর মনোনয়ন জমা দিতে সন্দেশখালি-১, সন্দেশখালি-২, মিনাখাঁ এবং হাড়োয়া ব্লকের বিজেপি প্রার্থীরা বসিরহাটে মহকুমাশাসকের দফতরে যান।
ভাঙড়ে রাজ্যপাল
মনোনয়নের শেষ দিনে ভাঙড়ের যে এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল, শুক্রবার সেখানে গেলেন রাজ্যপাল। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আনন্দ বোস বিজয়গঞ্জ বাজারে যান। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ থাকেন তিনি। মনোনয়ন ঘিরে অশান্তির ঘটনার বিবরণ স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে চান। পরে সেখান থেকে ভাঙড়-২ ব্লকের বিডিও অফিসে যান রাজ্যপাল। ভাঙড় কলেজে গিয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। সেই সময় কলেজের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন আইএসএফ প্রার্থী। অভিযোগ, তাঁদের মনোনয়ন জমা করতে দেয়নি শাসকদল। ওই আইএসএফ প্রার্থীদের মধ্যে থেকে দু’জন ভিতরে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে কথাও বলেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘কয়েকটি এলাকায় দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। তথ্য সংগ্রহ করেছি। যা দেখেছি, যা শুনেছি, তা খতিয়ে দেখব। বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে বাংলার মানুষের। গণতন্ত্রের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। সাংবিধানিক ভাবে হিংসাকে নির্মূল করতে হবে। হিংসা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’ ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কি তাঁর কথা হয়েছে? ভাঙড়ে সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বোস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমার সাংবিধানিক সহকর্মী। আমাদের মধ্যে যা কথা, তা বাইরে বলার নয়।’’ রাজ্যপালের ভাঙড় সফরকে ‘সাধুবাদ’ জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যপাল যে ভাবে ভাঙড়ে গেলেন, তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। এই পদক্ষেপ শুভবার্তা দেয়। রাজ্যপালকে নিশ্চিত করতে হবে যে, বাংলায় নির্ভয়ে ভোটে অংশ নিতে পারবেন সকলে। তা না হলে, মানুষের আসল কাজ হবে না। সন্ত্রাসের বাংলা হয়ে গিয়েছে এখন।’’
নবজোয়ারের মঞ্চ থেকে মমতা
শুক্রবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির শেষ দিন ছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার ইন্দিরা ময়দানে বক্তৃতা করেন মমতা। সেই সভা থেকে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমকে একই বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। তাঁর আক্রমণের নিশানা থেকে বাদ পড়েনি আইএসএফ-ও। তবে সরাসরি নওশাদ সিদ্দিকি কিংবা তাঁর দলের নাম করেননি তিনি। মমতা বলেন, “ভাঙড়ের ঘটনা কিছু গুন্ডা করেছে। তৃণমূল করেনি। আমাদের দু’জন কর্মী মারা গিয়েছে।” সেখানকার একটি দল মানুষকে প্ররোচিত করেছে বলে অভিযোগ করলেও, নির্দিষ্ট কোনও দলের নাম করেননি তিনি। ভাঙড়ে অশান্তির পিছনে বিজেপির টাকা রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশিই, তাঁর মত, পঞ্চায়েত ভোটে এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন এর আগে পশ্চিমবাংলা দেখেনি। পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘‘২ লক্ষ ৩১ হাজার মনোনয়ন জমা পড়েছে। এত শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন এর আগে কখনও হয়নি।’’ বাম আমলের ‘অশান্তি’র প্রসঙ্গও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘২০০৩ সালে ৭০ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে মারা গিয়েছিলেন ৩৬ জন।’’