মধ্যপ্রদেশের কুনো জাতীয় উদ্যানে মৃত্যু হল আরও একটি চিতার। এ নিয়ে গত চার মাসে ভারতের মাটিতে মৃত্যু হল আটটি চিতার। জানা গিয়েছে, আফ্রিকা থেকে আনা মৃত চিতাটির নাম ছিল সুরজ। তাকে শুক্রবার সকালে কুনোর জঙ্গলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। সুরজের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার চেষ্টা করছেন বনকর্মীরা।
গত মঙ্গলবারই আফ্রিকা থেকে আনা সপ্তম চিতা তেজসের মৃত্যু হয়েছিল। তার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা ছিল, চিতাটি ভিতর থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। কিছু দিন আগে জঙ্গলের আর একটি চিতার সঙ্গে তার লড়াই বাধে। সে সময় শরীরে একাধিক ক্ষত হয়ে গিয়েছিল। ওই লড়াইয়েরই রেশ কাটাতে পারেনি তেজস। তার পর থেকেই আতঙ্কে ভুগছিল আফ্রিকা থেকে ভারতের জঙ্গলে আনা চিতাটি। যা তাকে শারীরিক ভাবে আরও দুর্বল করে দেয়। তাতেই ঘনিয়ে আসে মৃত্যু।
সুরজের মৃত্যুর কারণ কী, তা এখনও জানা যায়নি। গত ২৭ মার্চ স্ত্রী চিতা সাশার মৃত্যু হয় কিডনির সমস্যায়। ২৩ এপ্রিল ‘কার্ডিও-পালমোনারি ফেলিওরে’ মৃত্যু হয় উদয়ের। গত ৯ মে অন্য একটি চিতার সঙ্গে মারামারিতে মৃত্যু হয় স্ত্রী চিতা দক্ষের। গত ২৫ মে মৃত্যু হয় দু’টি চিতাশাবকেরও।
গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই পরিকল্পনা মেনে আফ্রিকার একাধিক দেশ থেকে ভারতে চিতা আনা হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয় কুনোর জঙ্গলে। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা আসে ভারতে। তেজসের পর এ বার সুরজের মৃত্যুতে ভারতের জঙ্গলে পুনরায় চিতা ফিরিয়ে দেওয়ার যে পরিকল্পনা নরেন্দ্র মোদী করেছিলেন, তা বড়সড় ধাক্কা খেল, বলাই যায়। এ বছর মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বনপ্রাণ বিশেষজ্ঞ ভিনসেন্ট ভান ডার মেরওয়ে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছিলেন, ভারতে আরও চিতার মৃত্যু হতে পারে। তাঁর দাবি ছিল, অন্য সমস্ত দিক ঠিক থাকলেও চিতা যখন নিজের এলাকা চিহ্নিত করবে বেড়াবে তখন তাকে মোকাবিলা করতে করতে হবে বাঘ এবং চিতাবাঘের সঙ্গে। সেই লড়াইয়ে বিদেশ থেকে আনা চিতার এঁটে ওঠা মুশকিল। যদিও অন্য কোনও প্রাণীর সঙ্গের মারামারিতে এখনও পর্যন্ত কোনও চিতার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। বরং নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মৃত্যু হয়েছিল স্ত্রী চিতা দক্ষের।