বিহারে তিন জায়গায় হানা দিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। প্রায় পাঁচ বছরের পুরনো অর্থ তছরুপের একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গত শনিবার অমিত কুমার ওরফে বাচ্চা রাইয়ের বাড়ি, বিষুন রাই মহাবিদ্যালয় এবং বিষুন রাজদেও টিচার্স ট্রেনিং কলেজ— এই তিন জায়গায় হানা দেন তদন্তকারীরা। তল্লাশির পরে বেশ কিছু নথি এবং নগদ ২কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি। পরে সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ইডির দাবি নামে বেনামে আরও সম্পত্তি রয়েছে বাচ্চার।
অভিযুক্ত বাচ্চা রাইয়ের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এ মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল পটনা পুলিশ। পরে এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে ইডি। ইডির তরফে জানানো হয় বাচ্চার স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসেই পটনার বিশেষ পিএমএলএ আদালতে এই মামলার চার্জশিট জমা করে তদন্তকারী সংস্থাটি। ইতিমধ্যেই অন্তত ১০০টি জায়গায় বাচ্চা জমি কিনেছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
বাচ্চার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে বেসরকারি কলেজের মালিক হিসাবে তিনি পড়ুয়াদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তাঁদের পরীক্ষার ফলাফল বদলে দিতেন। এই মামলা বিহারের ‘টপার দুর্নীতি মামলা’ নামেই পরিচিত। বাচ্চার সঙ্গেই এই মামলায় নাম জড়ায় বিহারের মাধ্যমিক বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান লালকেশওয়াড় সিংহের। তদন্তে নেমে ই়ডি আধিকারিকেরা দেখেন বাচ্চা এবং তাঁর স্ত্রীর নামে বহু কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এই সবই অবৈধ উপায়ে অর্জিত। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে চাননি বাচ্চা।
সম্প্রতি ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে আয়কর হানায় ৩৫৩ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রের খবর। মনে করা হচ্ছে, দেশে এর আগে কোনও আয়কর হানায় এক সঙ্গে এত কালো টাকা উদ্ধার হয়নি। উদ্ধার হওয়া ওই কোটি কোটি টাকার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে কংগ্রেস নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ ধীরজ সাহুর। ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডে গত বুধবার থেকে আয়কর হানা শুরু হয়েছে। ওড়িশার একটি বড় মদ কারখানা থেকে প্রথমে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা উদ্ধার করেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। সেই অর্থের উৎস সন্ধান করার সময় তদন্তকারীদের হাতে ধীরজের নাম উঠে আসে। তার পরই তাঁর বাড়িতে তল্লাশিতে যান আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। শনিবার রাঁচীতে তাঁর বাড়ি-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। কংগ্রেস সাংসদের বাড়ি থেকে তিন ব্যাগ ভর্তি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়াও মদ কারখানার এক শীর্ষ কর্তা বান্টি সাহুর বাড়ি থেকে টাকাভর্তি প্রায় ১৯টি ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর।