এক বছর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তাকে কেন্দ্র করেই লোকসভা ভোটের আগে নতুন করে অশান্তির আঁচ নাগাল্যান্ডে। নতুন রাজ্য পূর্ব নাগাল্যান্ড গড়ার দাবিতে সেখানে বুধবার থেকে ‘জনতার জরুরি অবস্থা’ পালনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। শুক্রে বন্ধের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ‘ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন’ (ইএনপিও)। দাবি না মানলে লোকসভা ভোট বয়কটেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের পরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আর এক রাজ্যে হিংসা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। মায়ানমার সীমান্ত লাগোয়া পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছ’টি জেলা— মন, তুয়েনসাং, কিফিরে, নোকলক, লংলেং এবং শামাতোরকে নিয়ে নতুন রাজ্য গড়ার দাবিতে কয়েক বছর ধরেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ওই এলাকায় বসবাসকারী সাতটি জনজাতি গোষ্ঠীর যুক্তমঞ্চ ইএনপিও। দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে তারা। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্য ভাগের দাবিতে বিধানসভা নির্বাচন বয়কটের ডাক দিলেও শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন ইএনপিও নেতৃত্ব।
তাঁদের ওই পদক্ষেপের কারণ ছিল শাহের প্রতিশ্রুতি। সে সময় নাগাল্যান্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এনডিপিপি-বিজেপি জোট ক্ষমতায় ফিরলে সমস্যার ‘ইতিবাচক সমাধান’ হবে। কিন্তু গত এক বছরে কোনও উদ্যোগ না দেখে নতুন করে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে পূর্ব নাগাল্যান্ডে। আন্দোলন পরিচালনা করছেন মায়ানমার ও পূর্ব নাগাল্যান্ডে বসবাসকারী কন্যাখ নাগা জনগোষ্ঠীর নেতারা। অন্য দিকে, রাজধানী কোহিমা-সহ পশ্চিম ও মধ্য নাগাল্যান্ডের মূল বাসিন্দা টাংখুল নাগারা পৃথক রাজ্যের বিরোধী।
বিরোধীদের দাবি, নব্বইয়ের দশকে কংগ্রেস সরকারের আমলে উন্নয়ন প্রকল্প রূপায়ণে জেলাভিত্তিক দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও গত দু’দশকে উন্নয়নের ক্ষেত্রে শুধু কোহিমা-ডিমাপুর অঞ্চলকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আর সেই বঞ্চনা থেকেই উঠে এসেছে পৃথক রাজ্যের দাবি। উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসাম্য দূর করার প্রতিশ্রুতি মিললেও বিজেপি জোটের সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদেরও।