সহযাত্রীর দেওয়া চা খেয়ে ঢুলে পড়লেন কাঞ্চনকন্যায়, ‘উষ্ণ অভ্যর্থনা’য় ভুলে সর্বনাশ ২ বাংলাদেশির

দূরপাল্লার ট্রেন। সহযাত্রীদের সঙ্গে গল্প জমেছিল বেশ। চা হাতে নিয়ে এই দেশ, ওই দেশ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হল। তার পর নিজের বার্থে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন দুই বাংলাদেশি। জ্ঞান যখন ফিরল, তখন তাঁরা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। সহযাত্রীর ‘উষ্ণ অভ্যর্থনা’য় সর্বস্ব খুইয়ে মাথায় হাত দুই বাংলাদেশি পর্যটকের! সাহায্যের জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

গত ২৪ নভেম্বর শিলিগুড়ি যাবেন বলে শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা ইয়ানা এবং তাঁর ভাই। ট্রেনে তাঁদের সিট ছিল ‘আরএসি ৬৩’। ওই মহিলা জানান, ‘আরএসি ৫৭’-র দুই সহযাত্রী তাঁদের সঙ্গে অনেক গল্প করেন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির খোঁজ নেন। রাজনীতি থেকে সংসারের টুকিটাকি, নানা কথা বলছিলেন তাঁরা। রাত গভীর হলে ঘুমিয়ে পড়েন সবাই।

তার পর?

বাংলাদেশি পর্যটক ইয়ানা বলেন, ‘‘রাত ৩টে নাগাদ আমাদের ঘুম থেকে তুলে দেন ওই দু’জন। ডেকে বলেন, তাঁরা এখনই নেমে যাবেন। ওঁরা বললেন, আমাদের কেউ এক জন চাইলে ওঁদের সিটে গিয়ে আরাম করে ঘুমিয়ে পড়তে পারি। তার পর আমাদের চা খেতে দেন। নিমরাজি হলেও ওঁদের জোরাজুরিতে কাপটা হাতে নিই। চা খেয়ে সিটে গিয়ে ব্যাগপত্র মাথার কাছে রেখে আবার ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তার পর আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরল, জানলাম শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে শুয়ে রয়েছি!’’ ইয়ানার সঙ্গে তাঁর ভাইও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের নেশাজাত কোনও জিনিস খাওয়ানো হয়েছিল বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

অন্য দিকে, বিদেশবিভুঁইয়ে এসে দু’জনে সব জিনিসপত্র খুইয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইয়ানা। তিনি বলেন, ‘‘আমার হাতে সোনার ব্রেসলেট ছিল, ব্যাগে প্রায় ৭ হাজার টাকা ছিল। তা ছাড়া কিছু বিদেশি মুদ্রা রেখেছিলাম। আমার ভাইয়ের কাছে প্রায় ১০ হাজার টাকা ছিল। সে সব লুট হয়ে গিয়েছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, আমরা তো সর্বস্ব খুইয়েছি। কোনও প্রকারে আমাদের বেনাপোল সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করুন। তা হলে আমরা দেশে ফিরে যেতে পারি।’’

বাংলাদেশ থেকে ভারতে বেড়াতে আসা ইয়ানা তাকিয়ে প্রশাসনের দিকে।

শিলিগুড়ি জিআরপির এসপি কুনওয়ারভূষণ সিংহ জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরা তদন্ত করছেন। খড়্গপুর জিআরপির সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.