স্কুলে বসেছিল বিয়ের আসর। পরদিন স্কুলে গিয়ে বাসি খাবার আর উচ্ছিষ্টের দুর্গন্ধে অস্থির পড়ুয়া থেকে শিক্ষক। শেষ পর্যন্ত বিয়েবাড়ির ময়লা নিজেরাই সাফ করল মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের জয় কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। স্কুলে গিয়ে পড়াশোনার বদলে ময়লা পরিষ্কার করতে হচ্ছে সন্তানদের, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
স্থানীয় একজনের ছেলের বিয়ের বৌভাতের অনুষ্ঠানের আসর বসেছিল জয় কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর ফলে সারারাত উৎসব চলে স্কুলে। মঙ্গলবার সকালে স্কুলে গিয়ে অনুষ্ঠানের বাসি, পচা খাবারের দুর্গন্ধে অস্থির পড়ুয়া থেকে শিক্ষকরা। পরিস্থিতি এমন হয় যে, মুখে রুমাল বেঁধে ঘুরতে হয় পড়ুয়া, শিক্ষকদের। এই পরিস্থিতিতে নিজেরাই স্কুলঘর পরিষ্কার করার উদ্যোগী হয় স্কুলটি। অভিযোগ, শিক্ষকদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক পড়ুয়াদের ময়লা সাফ করতে নামানো হয়। যে খবর অভিভাবকদের কাছে পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। প্রধান শিক্ষকের দাবি, স্কুলে যে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান চলছে, তা তাঁর জানা ছিল না। তাঁকে এ ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি। অন্য দিকে, অভিযুক্তদের পাল্টা দাবি, স্কুলে নয়, স্কুলের ফ্লাড সেন্টারে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। স্কুল চত্বর পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি তাঁদের। যদিও সন্তানদের স্কুল সাফ করার দৃশ্য দেখে চুপ করে থাকতে পারেননি অভিভাবকরা। কেন পড়তে এসে বিয়েবাড়ির ময়লা সাফ করতে হবে বাচ্চাদের? প্রশ্ন মা, বাবাদের। স্কুল কি করে বিয়েবাড়ি ভাড়া দেওয়া যায়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
যদিও প্রধান শিক্ষকের দাবি, শিক্ষকদের না জানিয়েই সামান্য ময়লা নিজেরা সাফ করে দিয়েছে পড়ুয়ারা। শিশুদের দিয়ে নোংরা পরিষ্কারের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটি জলের বোতল আর কিছু থালা পড়ে থাকতে পারে। সেটা বাচ্চারা আমাদের না জানিয়েই পরিষ্কার করেছে।’’ প্রধান শিক্ষক সুশীল হাঁসদা বলেন, ‘‘এখানে বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য কেউ অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি জানতে চাওয়ায় অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, যেখানে একটি ফ্লাড সেন্টার আছে, সেখানেই অনুষ্ঠান করা হয়েছে।’’