নিখোঁজ-ডায়েরি হওয়ার পরেও সেই ব্যক্তির সন্ধানে সক্রিয় হয়নি থানা। পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির এমন একের পর এক অভিযোগ উঠতেই এ বার থানাগুলিকে নির্দেশিকা পাঠাল লালবাজার।তাতে বলা হয়েছে, নিখোঁজ নাবালক-নাবালিকার বা অপহৃতের তালিকা তৈরি করে থানাগুলি প্রথমে পাঠাবে উপ-নগরপালের বা ডিভিশন অফিসে। সেখান থেকে ওই তালিকা পাঠানো হবে লালবাজারে।
তিলজলায় নিখোঁজ থাকা সাত বছরের শিশুকে খুনের ঘটনার আগেও এক বার পুলিশি গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল চলতি মাসেই। সেই ঘটনায় ট্যাংরা থানা এলাকা থেকে তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ থাকা এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল খাল থেকে। তখন অভিযোগ উঠেছিল, খুন করে সেখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে ওই যুবককে। কিন্তু ওই যুবক নিখোঁজ হওয়ার পরে তাঁর পরিবার থানায় অভিযোগ জানালেও প্রথমে পুলিশ তেমন গুরুত্ব দেয়নি। এমনকি, ঘটনাটি লালবাজারের গোয়েন্দাদেরও থানা থেকে জানানো হয়নি বলে দাবি।
শহরে নিখোঁজ হওয়ার একাধিক ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় সতর্ক হচ্ছে লালবাজার। থানায় নিরুদ্দেশ বা অপহরণের মামলা দায়ের হলে তা প্রতিদিন রিপোর্ট আকারে জানাতে হবে লালবাজারকে। মঙ্গলবার ওই নির্দেশিকা জারি করে লালবাজার থানাগুলিকে তা কার্যকর করতে বলেছে। নিখোঁজ বা অপহরণের মামলা দায়ের হওয়ার পরে থানা কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে বা মামলা করেছে কি না, তার তালিকা নির্দিষ্ট ফর্মে ভরে জানাতে হবে।
লালবাজারের তরফে পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রতিদিন বিভিন্ন থানায় নাবালক-নাবালিকাদের নিখোঁজ হওয়ার এবং অপহরণ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। সে সব একত্রিত করে তালিকা তৈরি করে প্রতিদিন রাত একটার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ডিভিশন অফিসে পাঠাতে হবে। সেখান থেকে পরের দিন সকাল ৬টার মধ্যে লালবাজার ক্রাইম কন্ট্রোলের ওসিকে তা পাঠাতে হবে। যার এক কপি যাবে গোয়েন্দা বিভাগের সিআরএস-এর ওসির কাছে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বর্তমানে কারও নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের হলে থানাকে তা ‘মিসিং পার্সনস পোর্টাল’-এ নিয়মিত আপডেট করতে হয়। যা লালবাজারের এবং ওই গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা দেখতে পান। লালবাজারের নতুন নির্দেশের পরে নাবালক-নাবালিকাদের নিখোঁজ বা অপহরণ সংক্রান্ত তথ্য ওই কর্তাদের বা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে আর পোর্টালে গিয়ে খুঁজতে হবে না। তাঁরা সরাসরি জেনে যাবেন, কোন থানা এলাকায় কে নিখোঁজ এবং সংশ্লিষ্ট থানাই বা কী ব্যবস্থা নিয়েছে।
থানার পাশাপাশি গোয়েন্দা দফতরের নিরুদ্দেশ বিভাগও পৃথক তদন্ত করতে পারবে। বা থানার সঙ্গে কথা বলে তাদের সাহায্য করবে। এক পুলিশকর্তা জানান, এতে নিখোঁজ মামলার তদন্তে গফিলতির আশঙ্কা কমবে। অভিযোগ দায়ের হানার পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগও দ্রুত তদন্তে নামতে পারবে।