ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে গণপিটুনি দিল উত্তেজিত জনতা। ঘটনাস্থল সেই উত্তর ২৪ পরগনা। এ বার গণপিটুনির ঘটনা ঘটল গাইঘাটা এলাকায়। জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে ওই যুবককে উন্মত্ত জনতার হাত থেকে তাঁকে বাঁচায়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
গাইঘাটা থানা এলাকার মধ্যেই পড়ে বেড়িগোপালপুর। রবিবার সকাল থেকেই সেখানে উত্তেজনা তুঙ্গে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই এক যুবককে ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখেছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, রবিবার সকালে সেই যুবক এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে পড়েন। ওই বাড়ির মালিকের দাবি, বাড়িতে ঢুকেই ওই যুবক তাঁর কন্যাকে ইশারায় ডাকেন। যুবক ইশারা করছেন বুঝতে পেরেই জ্ঞান হারায় ওই ব্যক্তির কন্যা। তার পরেই এলাকায় হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা যুবককে গণপিটুনি দেন বলে অভিযোগ। তার পর পাড়ারই একটি ঘরে তাঁকে বেঁধে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
যে ব্যক্তির বাড়িতে সকালে যুবক ঢুকে পড়েছিলেন বলে দাবি, সেই বাড়ির মালিক অলোক দেবনাথ বলছেন, ‘‘মেয়ে দেখছে যে, চোখ দিয়ে ইশারা করছে। সেই দেখে আমার মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এখন জ্ঞান এসেছে মেয়ের। মেয়ে বলছে, ‘ওর চোখ দুটো আমার দিকে এগিয়ে আসছিল।’ সেটা দেখেই মেয়ে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায়। আমার স্ত্রী চলে এসে দেখে, তখনও চোখ দিয়ে ইশারা করে ডাকছে ওই ছেলেটি। ধরতে গেলে পালিয়ে যাচ্ছিল। ধরে তার পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পাবলিকই মেরেছে মিথ্যা কথা বলার জন্য। ছেলেধরা ভেবে ওকে মেরেছে।’’
ইদানীং গুজবের জেরে গণপিটুনির একাধিক ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতেই। গুজবে কান না দেওয়ার কথা বার বার প্রচার করছে পুলিশ-প্রশাসন। সে কথা জানেন অলোকও। তবুও কেন স্থানীয় বাসিন্দারা আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন? অলোকের জবাব, তিনি মারধর করেননি, করেছে জনতা। তিনি বলছেন, ‘‘বহু জায়গায় শোনা যাচ্ছে, বাচ্চাকে ধরে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমার মেয়েকেও হয়তো সে রকমই কিছু করতে এসেছিল। যে জন্য পাবলিক ওকে মেরেছে। পাবলিকই মেরেছে, আমরা কিছু বলিনি। তার পর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার পর পাড়ারই একটি ঘরে বেঁধে রাখা হয়েছিল। গাইঘাটা থানার পুলিশ এসে যুবককে উন্মত্ত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন হতে পারেন।