বহু টালবাহানার পর কাটল যাদবপুরে সমাবর্তন জট, ২৪ ডিসেম্বরই হচ্ছে ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠান

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে জট কাটল। অবশেষে সমাবর্তন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির বৈঠক হতে চলেছে। এই বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরের অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, ১৮ ডিসেম্বর ওই বৈঠক হবে।

সমাবর্তন করতে এই বৈঠকের দরকার ছিল। স্থায়ী উপাচার্য নেই বলে ২০১৯ সালের বিধি উল্লেখ করে উচ্চ শিক্ষা দফতর বৈঠক করতে বার বার নিষেধ করে। ফলে সমাবর্তন ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। বিষয়টি নিয়ে যাদবপুরে রাজ্যপালের একক ভাবে মনোনীত অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দেখা করেন। ওই বৈঠকের পরে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কর্মসমিতির বৈঠকের অনুমতি দেওয়া নিয়ে তাঁরা আইনি পরামর্শ নেবেন।

শুক্রবারেই সেই অনুমতি দিয়েছে উচ্চ শিক্ষা দফতর। নিয়ম অনুযায়ী কর্মসমিতি এবং কোর্টের বৈঠকে সমাবর্তন করার বিষয়টি পাশ করাতে হয়। সমাবর্তন নিয়ে জটিলতা কাটাতে শিক্ষামন্ত্রী এবং রাজ্যপালকে শিক্ষক সমিতি জুটার পক্ষ থেকে খোলা চিঠিও দেওয়া হয়েছিল।

শুধু কর্মসমিতির বৈঠক নয়। সূত্রের খবর, সমাবর্তন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠকেরও অনুমতি উচ্চ শিক্ষা দফতর দিয়েছে। প্রসঙ্গত, কোর্ট বৈঠক করতে গেলে রাজ্যপালেরও অনুমতি পাওয়া জরুরি। সেই অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি বলেই খবর। উচ্চ শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, কর্মসমিতি, কোর্ট-দুই বৈঠক শুধুমাত্র সমাবর্তনের বিষয় নিয়ে করা যাবে। দুই বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে তা ২০১৯ সালের বিধি অনুযায়ী যখন স্থায়ী উপাচার্য আসবেন, তাঁর অনুমোদন নিয়ে নিতে হবে।

রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গে এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘‘রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে কথা বলে যে অ্যাজেন্ডা আছে মেটাতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের আদেশে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। কোনও দ্বন্দ্ব নয়, আলোচনা করতে হবে। দ্বন্দ্বে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না।’’ এ দিন সেখানে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দখল দেওয়ার অভিযোগ তুলে কালো পতাকা দেখান রাজ্যপালকে।

এ দিকে এরই মধ্যে রাজভবন অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালের আইন অনুযায়ী অন্তর্বর্তী উপাচার্যরা সেনেট, সিন্ডিকেট, কর্মসমিতি, কোর্ট-সহ বিভিন্ন নীতি নির্ধারক কমিটির বৈঠক ডাকতে পারবেন।

উল্লেখ্য স্থায়ী উপাচার্যের অভাবে রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বন্ধ হয়ে রয়েছে কয়েক বছর ধরে। বেশির ভাগ জায়গাতেই এখনও কোর্ট, কর্মসমিতি গঠন হয়নি। কোর্টের মিটিং ছাড়া, সমাবর্তন সম্ভব নয়। উচ্চ শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, স্থায়ী উপাচার্য ছাড়া এই ধরনের কমিটির বৈঠকের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।

এ দিকে বৈঠক নিয়ে সম্প্রতি রাজভবনের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরে রাজ্যের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কোর্ট বা কর্মসমিতির বৈঠকের অভাবে সমাবর্তন করা যাচ্ছে না অথবা প্রশাসনিক কাজকর্ম থমকে, সেখানে সেই বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.