দিল্লি হাই কোর্টে শুনানি চলাকালীন প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুন করার কথা স্বীকার করেননি অভিযুক্ত প্রেমিক আফতাব পুনাওয়ালা! এমনটাই দাবি করলেন আফতাবের আইনজীবী অবিনাশ কুমার। মঙ্গলবার এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় অবিনাশ বলেন, ‘‘আফতাব দিল্লি পুলিশকে সহযোগিতা করছেন কিন্তু তিনি আদালতে কোনও স্বীকারোক্তি দেননি। প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করেছেন বলেও তিনি স্বীকার করেননি।’’
একই সঙ্গে আফতাব ‘‘দিল্লি পুলিশকে সব কিছু জানাতে চান’’ বলেও অবিনাশ মন্তব্য করেন।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের শুনানি চলাকালীন আফতাব নাকি আদালতে জানান যে, তিনি এখন কিছুই মনে করতে পারছেন না। তবে প্রতিশ্রুতি দেন, মনে পড়লে আস্তে আস্তে সব জানাবেন। পুলিশ শীঘ্রই তাঁকে খুনের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে নিয়ে যেতে পারে বলেও জানিয়েছিলেন আফতাবের আইনজীবী। শীঘ্রই আফতাবের নার্কো পরীক্ষা করা হবে বলেও সূত্রের খবর।
অবিনাশ আরও জানিয়েছেন, পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন আফতাব। আদালতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছিলেন অভিযুক্ত। আদালত তাঁকে সেই অনুমতি দিয়েছে বলেই তিনি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার শুনানি শেষে আফতাবকে ৪ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়ার আবেদনও খারিজ করে দেয় আদালত। আপাতত পুলিশের উপরেই আস্থা রাখা উচিত বলেও বিচারপতি উল্লেখ করেন। দিল্লি পুলিশও দাবি করেছে যে, তাদের তরফে তদন্তের প্রায় ৮০ শতাংশ সমাধান করা হয়ে গিয়েছে।
ছ’মাস আগে ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুনের অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন প্রেমিক আফতাব। অভিযোগ, শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করে দেন আফতাব। পুলিশের দাবি, সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করতে কেনা হয়েছিল নতুন ফ্রিজও। পরে ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলে বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসা হয়।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ১২ নভেম্বর শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। তদন্তে নেমে একাধিক প্রমাণ উঠে এসেছে পুলিশের হাতে। একটি ধারালো করাতও খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে এই করাত দিয়েই শ্রদ্ধার দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছিল। খুঁজে পাওয়া গিয়েছে মাথার খুলির কিছু অংশ-সহ একাধিক হাড়ের টুকরো। সেই হাড়ের টুকরোগুলি শ্রদ্ধারই কি না জানতে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।