দীপাবলির দুপুরেও এক্স যুদ্ধ অব্যাহত রইল বিজেপি এবং তৃণমূলের। এক দিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে নিরাপত্তার খতিয়ান তুলে ধরে তৃণমূল সেনাপতিকে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্য দিকে, শুভেন্দুকে পাল্টা বিঁধতে আসানসোলের কম্বল বিতরণ কর্মসূচির কথা টানলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। যে কর্মসূচিতে গত বছর ডিসেম্বরে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল।
রবিবার শুভেন্দু কিছু নথি এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন টুইটার) পোস্ট করেন। সেই নথি দেখিয়ে বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, গত শুক্রবার অভিষেক তাঁর লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের অন্তর্গত ফলতায় যে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন, তাতে নিরাপত্তার জন্য সব মিলিয়ে ৪,৭০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কালীঘাট থেকে ফলতা পর্যন্ত বিভিন্ন থানা মিলিয়ে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তার অব্যবহিত পরেই শুভেন্দুর উদ্দেশে কুণাল লেখেন, ‘বিরোধী দলনেতা বোধহয় ভুলে গিয়েছেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকলে কী হতে পারে। গত বছর ডিসেম্বরে আসানসোলে তাঁর (শুভেন্দুর) কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছিল। যে কর্মসূচির কোনও পুলিশি অনুমতিই ছিল না।’
শুভেন্দু তাঁর পোস্টটিতে কটাক্ষের সুরে লিখেছিলেন, ‘না! জাঁহাপনা কোনও যুদ্ধে যাননি বা বিদেশের হাতে থাকা কোনও এলাকা দখলে আনতে যাননি। গিয়েছিলেন কিছু বস্ত্র নিয়ে। যার খরচ মোট নিরাপত্তার খরচের তুলনায় খুবই সামান্য’। বিরোধী দলনেতা এ-ও লিখেছিলেন, ‘আমি শুধু ভাবছি, দেশের রাষ্ট্রপতিকেও কি এত দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা দেওয়া হয়?’ কুণাল এই বক্তব্য নিয়েও শুভেন্দুকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন। তৃণমূল মুখপাত্র লিখেছেন, ‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আমাদের ফকির প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার খরচ ৫৪০ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৬০০ কোটি টাকা করেছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় দৈনিক খরচ এক কোটি ৬৪ লক্ষ টাকা।’
প্রসঙ্গত, গত বছর ডিসেম্বরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতা তথা আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারির উদ্যোগে কম্বল বিতরণ কর্মসূচি হয়েছিল। সেখানে হাজির ছিলেন শুভেন্দুও। সেই অনুষ্ঠানেই ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে তিন জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। জখম হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন। সেই মামলায় জিতেন্দ্রকে বেশ কিছু দিন জেলও খাটতে হয়। কয়েক মাস তাঁর আসানসোল প্রবেশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। শুভেন্দু যখন অভিষেকের বস্ত্র বিতরণের কর্মসূচিতে নিরাপত্তা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হলেন, তখন পাল্টা তাঁকে কম্বল নিয়ে খোঁচা দিল তৃণমূল। দীপাবলির দুপুরে এক্স যুদ্ধ হল। কাপড় বনাম কম্বল!