সপ্তাহান্তে রাতের আকাশে খসে পড়বে একের পর এক উল্কা! বঙ্গবাসীকে চোখ রাখতে হবে সিংহরাশির মাথায়

রাতের অন্ধকার আকাশে তাকালেই দেখা যাবে, একের পর এক তারা খসে পড়ছে। খুব বেশি সময় অপেক্ষাও করতে হবে না। কারণ ঘণ্টায় প্রায় ১৫টি পর্যন্ত উল্কা খসে পড়তে পারে। সপ্তাহান্তেই দেখা যাবে এই দৃশ্য। বিজ্ঞানীরা তাকে বলছেন ‘লিওনিড মেটিওর শাওয়ার’। এমনকি এ রাজ্যের মানুষও দেখতে পারবেন সেই উল্কাপাত। তার জন্য রাত জাগতে হবে।

কবে, কখন দেখা যাবে?

লিওনিড মেটিওর শাওয়ার ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ৬ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত রোজ রাতেই খসে পড়বে উল্কা। তবে সবচেয়ে বেশি উল্কাপাত হবে ১৬ নভেম্বর, রবিবার রাত থেকে ১৭ নভেম্বর সোমবার ভোর পর্যন্ত। ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ করে উল্কাপাত হতে পারে। ভোর ৩টে ১০ মিনিট নাগাদ পাতলা একফালি চাঁদ উঠবে। তাতে যদিও সমস্যা হবে না।

কী ভাবে হবে এই উল্কাবৃষ্টি?

১৬৯৯ সালে ৫৫পি/টেম্পল-টাটল ধূমকেতুটি সূর্যের কাছ দিয়ে গিয়েছিল। সে সময়ে একটি লেজ সে ফেলে গিয়েছিল কক্ষের উপরে। সেই লেজের মধ্যেই ১৬-১৭ তারিখ নাগাদ ঢুকে পড়বে পৃথিবী। প্রতি বছর নভেম্বর মাসের এই ১৬-১৭ তারিখ নাগাদ পৃথিবীর সঙ্গে সেই ধূমকেতুর কক্ষপথের কাটাকুটি হয়। এ বার সেই জায়গায় যদি আগে থেকেই ধূমকেতুর কোনও লেজ পড়ে থাকে, তা হলে তার ধুলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ে। আমরা তাকেই বলি উল্কাবৃষ্টি বলি। ৫৫-পি/ টেম্পল-টাটল প্রায় ৩৩ বছর পর পর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। ১৮৬৫ সালে প্রথম আবিষ্কার হয় এই ধূমকেতু।

কোথায় দেখা যাবে?

লিওনিড বা লিও বলতে বোঝায় নক্ষত্রমণ্ডল সিংহরাশিকে। রবিবার রাতে আকাশে তাকালে মনে হবে সব উল্কা সিংহের মাথা থেকে বার হচ্ছে। সিংহের মাথা থেকে ৩০ ডিগ্রি দূরে তাকালে দেখা যাবে সেই দৃশ্য। রবিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উঠছে সিংহরাশি। রাত যত বাড়বে, তত সিংহরাশি মাথার উপরে উঠবে। ততই ভাল দেখা যাবে উল্কাপাত।

সত্যিই কি সিংহরাশির মাথা থেকে খসবে তারা?

ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের অধিকর্তা সন্দীপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে একটা মহাকাশযানের মতো। তাতে সওয়ার আমরা। সেই মহাকাশযান রোজ দিক বদলায়। শনিবার পৃথিবী যে দিকে যাচ্ছে, সেই দিকে বসে রয়েছে নক্ষত্রমণ্ডল সিংহরাশির মাথা। তাই মনে হবে সব কণা আসছে সিংহের মাথা থেকে।

আবার কবে দেখা যাবে?

আগামী ১৩ ডিসেম্বর আবার উল্কাপাত দেখতে পাবেন পৃথিবীবাসী। এ রাজ্য থেকেও দেখা যাবে সেই উল্কাপাত। ঘণ্টায় প্রায় সাতটি করে উল্কা খসে পড়বে। নক্ষত্রমণ্ডল জেমিনিড বা মিথুনরাশি থেকে একের পর এক তারা খসতে দেখা যাবে।

তবে রবিবার লিওনিড মেটিওর শাওয়ার অনেক বেশি সুদৃশ্য হবে। কারণ, লিওনিডের কণা আকারে অনেক বড়। সেগুলি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে জ্বলে যায়। বড় কণা হওয়ার কারণে তাতে সময় লাগে তুলনামূলক বেশি। জেমিনিডের কণা তুলনামূলক ছোট হওয়ায় তা তাড়াতাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.