সহপাঠীদের থেকে একটু বেশিই দুষ্টু, তাই ‘সাসপেন্ড’ খুদে পড়ুয়া, টিসিও দিতে চায় স্কুল

ক্লাসের সহপাঠীদের থেকে একটু বেশিই দুরন্ত সে। অভিযোগ, দুষ্টুমির জেরে বিরক্ত সহপাঠীদের অভিভাবকেরাও। শিশুটির মা-বাবার অভিযোগ, দুষ্টুমির ‘অপরাধেই’ তাকে সাত দিনের জন্য সাসপেন্ড করেছে স্কুল। তাকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেটও দিতে চায় তারা! যদিও শেষ পর্যন্ত সন্তানকে বর্তমান স্কুল থেকে সরিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অভিভাবকেরা।

হরিনাভির একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের এই ঘটনায় রীতিমতো মুষড়ে পড়েছেন শিশুটির মা-বাবা। নিরুপায় হয়ে সন্তানের স্কুল বদলের কথা ভাবলেও নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়ে যাওয়ায় আদৌ তা সম্ভব হবে কি না, সেটাও ভাবাচ্ছে তাঁদের।

হরিনাভির ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, শিশুটি ক্লাসে সহপাঠীদের বইখাতা নিয়ে কাড়াকাড়ি করে, বা ছুড়ে ফেলে দেয় অন্যের পেন্সিল, বই-খাতা। এমনকি, সহপাঠীর কানে পেন্সিল ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করে থাকে। এ নিয়ে বাকি শিশুদের অভিভাবকেরা একাধিক বার অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত শিশুটির মা-বাবা আবার জানাচ্ছেন, অভিযোগ শুনে স্কুলে দেখা করতে গিয়ে শিক্ষকদের থেকে ভাল ব্যবহার পাননি তাঁরা। উল্টে শিক্ষকেরা জানান, তাঁদের সন্তানকে সাত দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রয়োজনে তাকে নিয়ে মনোবিদের কাছে যেতেও বলা হয়েছে।

ওই শিশুটির মা বলেন, ‘‘বাচ্চা দুষ্টুমি করলে স্কুল কেন সামলাতে পারবে না? এ জন্য সাত দিন সাসপেন্ড করবে? পাঁচ বছরের বাচ্চা সাসপেন্ড হওয়ার কী বোঝে?’’ তাঁর দাবি, স্কুলটির প্রতিটি ক্লাসরুমে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবু ক্লাসে শিশুটি কী ধরনের দুষ্টুমি করে, তার কোনও ভিডিয়ো ফুটেজ স্কুল কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি। যদিও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলছেন, ‘‘ভিডিয়ো ফুটেজ নির্দিষ্ট কয়েক দিন পরে মুছে যায়। এ বার থেকে তা সংরক্ষণ করে রাখা হবে।”

শিশুটির মা আরও জানাচ্ছেন, স্কুলের কথামতো তাঁরা বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের মনোরোগ চিকিৎসা বিভাগে তাঁদের সন্তানকে নিয়ে গিয়েছিলেন। অভিভাবকদের দাবি, সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুটির মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা টের পাননি। শুধু জানিয়েছেন, সে বাকি শিশুদের তুলনায় বেশি দুষ্টু। যদিও অভিযোগ, এর পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড়। এই পরিস্থিতিতে সাত দিন কেটে গেলেও শিশুটিকে পুরনো স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছেন না তাঁরা। সেই সঙ্গে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার বিভাগেও অভিযোগ করেছেন। তবে প্রধান শিক্ষিকার দাবি, ‘‘সাসপেন্ড করার কথা এক বারও বলিনি। বলেছি, ওকে সাত দিন বাড়িতে রেখে বোঝাতে। প্রয়োজনে মনোবিদ বা স্পেশ্যাল এডুকেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.