আরও এক বার বিতর্কের কেন্দ্রে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়। আরও এক বার প্রশ্নের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্তও। সম্প্রতি পড়ুয়াদের জন্য নয়া আচরণবিধি তৈরি করেছে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। নয়া বিধিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ধর্না দিলেই পড়ুয়াদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা নেওয়া হবে। আর কোনও পড়ুয়া যদি হিংসাত্মক কোনও ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন, তবে তাঁর জরিমানার অঙ্ক ৩০ হাজার হতে পারে। এমনকি অভিযুক্তকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বহিষ্কার করাও হতে পারে। কেড়ে নেওয়া হতে পারে তাঁর যাবতীয় শিক্ষাগত শংসাপত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা কার্যনির্বাহী সমিতি দীর্ঘ আলোচনার ভিত্তিতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও সমিতির এক সদস্য সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, আইনি একটি প্রক্রিয়ার জন্য নয়া বিধির একটা খসড়া তৈরি করা হয়েছে মাত্র। আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটা অংশ বলছে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকেই নয়া বিধি চালু হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এই প্রসঙ্গে ১৭টি ‘গুরুতর অপরাধে’র কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে আছে অবৈধ জমায়েত, জোরপূর্বক হস্টেল দখল করে রাখা, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অশালীন এবং আপত্তিকর শব্দ বলা কিংবা লেখা ইত্যাদি। নয়া বিধিতে এও বলা হয়েছে যে, সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগপত্র তৈরি হবে, তার একটা প্রতিলিপি তাঁর অভিভাবকের কাছেও পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ সময়ের পড়ুয়া তো বটেই, আংশিক সময়ের পড়ুয়াদের জন্যও প্রযুক্ত হবে এই বিধি।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিবিসির বিতর্কিত তথ্যচিত্র প্রদর্শনী নিয়ে আরও এক বার উত্তপ্ত হয়েছিল জেএনইউ চত্বর। তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয় এই বিধি আনার কথা প্রকাশ্যে আনল। আগেও নানা কারণে শিরোনামে এসেছে দেশের কুলীন এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। কখনও বাম মনোভাবাপন্ন পড়ুয়াদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে গেরুয়া শিবিরের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে, আবার বাম ছাত্রদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দেশবিরোধী’ কাজ চালানোর অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। অবশ্য নয়া এই বিধির কথা প্রকাশ্যে আসার পর একে ‘তুঘলকি’ বলে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবিরের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তিশ্রী ডি পণ্ডিতের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।