এক দশক পরেও বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে না জম্মু ও কাশ্মীরে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার লোকসভা ভোটের সঙ্গে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, অরুণাচল প্রদেশ এবং সিকিমে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করলেও ব্রাত্য থেকে গেল দেশের বৃহত্তম (আয়তনের হিসাবে) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি।
তবে বিধানসভা ভোট না-হলেও জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচ এবং লাদাখের একটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে শেষ বার বিধানসভা ভোট হয়েছিল অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে। ২০১৯ সালের অগস্টে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদটি বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার এবং রাজ্যের মর্যাদা বিলোপ করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার তিন বছর আগেই অবশ্য রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল বিধানসভা।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের বিষয়ে মোদী সরকারের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়ার পরেই সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দফায় দফায় সেখানে গিয়ে রাজ্য প্রশাসন, সেনা-আধাসেনা আধিকারিক এবং গোয়েন্দা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করাতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরে ভোট হল না এ বারও।
প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের আসন পুনর্বিন্যাসের দায়িত্বে থাকা ‘ডিলিমিটেশন কমিশন’-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করা হয়েছিল গত বছর। সাতটি আসনের মধ্যে ছ’টি বেড়েছে জম্মুতে (৩৭ থেকে ৪৩) এবং একটি কাশ্মীরে (৪৬ থেকে ৪৭)। কমিশন জানিয়েছে, ২০১১ সালের জনসংখ্যার ভিত্তিতেই আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যদিও অভিযোগ উঠেছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হিন্দুপ্রধান জম্মুতে মুসলিম প্রধান কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় বেশি আসন বাড়ানো হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় জম্মু-কাশ্মীরে যে পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে, তার প্রত্যেকটিতে এখন থেকে ১৮টি করে বিধানসভা কেন্দ্র থাকবে। অন্য দিকে, পূর্বতম রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে তৈরি হওয়া আর এক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে থাকবে একটি লোকসভা কেন্দ্র। অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীরের অংশ লাদাখে থাকা ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই বিলোপ হয়েছে। কিন্তু বাকি অংশে কবে ভোট হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেল।