চলতি বছরে ৯৯৪টি বিমানে বোমাতঙ্ক! এখনও পর্যন্ত সবই ভুয়ো, জানাল কেন্দ্র, গত দেড় বছরে কী হারে বদলেছে চিত্র?

চলতি বছরে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি বিমানে বোমা রাখার ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হয়েছে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এ কথা জানাল কেন্দ্র। সরকারি হিসাব অনুসারে, ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৯৪টি বিমানে বোমা রাখার ভুয়ো তথ্য ছড়ানো হয়েছে। বোমাতঙ্কের কারণে সম্প্রতি একের পর এক দেশীয় বিমান পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটেছে। কোনওটি দেরিতে রওনা দিয়েছে, কোনওটিকে মাঝআকাশ থেকে যাত্রাপথ বদলে অন্যত্র জরুরি ভিত্তিতে অবতরণ করানো হয়েছে। পরে প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ভুয়ো তথ্য ছড়িয়েছে।

বিমানেও বোমা রাখার ভুয়ো তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে কড়া আইন চালু করার চিন্তাভাবনা চলছে কেন্দ্রের। সোমবার থেকে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়েছে। অধিবেশন শুরুর দিনই কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মোহোল রাজ্যসভায় বিমানে বোমাতঙ্ক ছড়ানোর বিষয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি। সরকারি হিসাবে অনুসারে, ২০২২ সালের অগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিমানে বোমা থাকার ভুয়ো তথ্য ছড়িয়েছিল ২৭টি। ২০২৩ সালে সংখ্যাটি বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১২২। চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯৯৪। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, এতগুলি বোমাতঙ্ক ছড়ালেও কোনও ক্ষেত্রেই বিমানে বা বিমানবন্দরে বোমা পাওয়া যায়নি। তবে এর কারণে কিছু বিমানের পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে।

এই ধরনের ভুয়ো তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে কেন্দ্র কড়া পদক্ষেপের ভাবনাচিন্তা করছে বলে আগেই জানানো হয়েছে। অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী কে রামমোহন নায়ডুও রাজ্যসভায় জানিয়েছেন, আইনে সংশোধনী আনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি বিমানে যে বোমাতঙ্কগুলি ছড়িয়েছে, তার সিংগভাগেরই উৎস সমাজমাধ্যম। তার মধ্যে অনেকগুলিতেই ব্যবহারকারীর প্রোফাইলে নামের বদলে উদ্ভট গোছের কোনও কিছু ছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সে ক্ষেত্রে সমাজমাধ্যমের ওই হ্যান্ডলের ধরন বিবেচনা করে দেখার পরামর্শ দিয়েছে ব্যুরো অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (বিসিএএস)। বিশেষ করে, সেটি ব্যবহারকারীর নিজস্ব নামে রয়েছে, না কি ওই জাতীয় কোনও বেনামি হ্যান্ডল, তা দেখতে হবে। পাশাপাশি, বিমানটি যাত্রাপথের অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিমানে কোনও ভিআইপি রয়েছেন কি না, তা-ও এ সব ক্ষেত্রে খতিয়ে দেখার জন্য বলেছে বিসিএএস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.