আরজি করের বিচার চেয়ে জোটবদ্ধ ৮০ সংগঠন, বুধে সিজিও অভিযান, রয়েছে ‘দ্রোহের আলো’ কর্মসূচি

আরজি কর-কাণ্ডের দ্রুত বিচার চেয়ে এ বার এক ছাতার তলায় জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডকটরস’ এবং নাগরিক সমাজের প্রায় ৮০টি সংগঠন। যার নাম দেওয়া হল ‘অভয়া মঞ্চ’। সোমবার তারা একত্রে তাদের নয়া কর্মসূচির কথা জানিয়েছে। তাতে যেমন রয়েছে সিবিআইয়ের কাছে দ্রুত তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ করার আর্জি, তেমনই রয়েছে কয়েক দফা দাবি। যেমন, আগামী ৪ নভেম্বর ‘দ্রোহের আলো জ্বালো’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ৭ নভেম্বর রয়েছে, ‘জনতার চার্জশিট’ কর্মসূচি। সেখানে ‘তদন্তে বেশ কিছু জায়গায় ফাঁকফোঁকর’-এর কথা বলা হবে, জানিয়েছে ওই সংগঠনগুলি। বিচারের দাবিতে রাজ্যের জায়গায় জায়গায় প্রচার চলবে বলে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার আরজি কর হাসপাতালের গণকনভেনশন থেকে জুনিয়র ডাক্তার কিঞ্জল নন্দেরা ঘোষণা করেছেন, আগামী ৩০ অক্টোবর রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে সিবিআই দফতর, সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের মশাল মিছিল হবে। জানানো হয়েছে, নির্যাতিতার জন্য বিচার ছিনিয়ে-না আনা পর্যন্ত আন্দোলন জারি থাকবে। এর মধ্যেই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে শনিবার। যার নাম ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন’। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্‌স ফ্রন্ট’কে নিশানা করে ওই সংগঠনের সদস্যেরা রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি ইমেল করেছেন। মোট আট দফা দাবি মুখ্যসচিবকে পাঠানো ইমেলে তুলে ধরেছেন অ্যাসোসিয়েশনের জুনিয়র ডাক্তারেরা। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য আন্দোলনকারীদের দাবির সঙ্গে সহমত হতেও দেখা গিয়েছে। জুনিয়র ডক্টর্‌স’ ফ্রন্টের প্রথম দাবি ছিল নির্যাতিতার জন্য বিচার। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদেরও প্রথম দাবি সেটিই। এ ছাড়া চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিও মুখ্যসচিবকে ইমেলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন। জানানো হয়েছে রোগী পরিষেবায় পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর দাবিও।

আর জি কর মেডিক্যালে চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের পর যে বিষয়টি আলোচনা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে, তা হল থ্রেট কালচার বা হুমকি সংস্কৃতি। যার বিরুদ্ধে বারবার গর্জে উঠেছেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। জুনিয়র ডাক্তারদের ১০ দফা দাবির অন্যতম একটি হল কলেজগুলোতে হুমকির সংস্কৃতি বন্ধ করা। কিন্তু নবান্নের বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারেরা যখন থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে সরব হন, তখন অত্য়ন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে পাল্টা থ্রেট কালচারের অভিযোগ শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবারের কেসটা আপনারা দেখলেন, এ রকম আগেও হয়েছে। নর্থ বেঙ্গল মেডিক্য়ালে। আমার মেয়রও ঘেরাও ছিলেন। জোর করে ইস্তফা দেওয়ানো হল। এটাও তো ‘থ্রেট কালচার’। ‘থ্রেট কালচার’-এর অভিযোগে আরজি কর মেডিক্যালে ৫১ জন ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাতে কেন স্বাস্থ্য দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন ৮০টি সংগঠন একত্র হয়ে আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়াতে চাইছে। জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টের নেতৃত্বে যে আন্দোলন চলেছে বা চলবে তাদের বাইরে থেকে যারা সমর্থন করেছেন তাদেরই মধ্যেকার বেশ কিছু সংগঠন এই মঞ্চ তৈরি করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.