সত্তর লক্ষ ভুয়ো জব কার্ডের আধার লিঙ্ক করা যাচ্ছে না, দিদির ভূতেরা এইসব কার্ডের টাকা লোপাট করছে: শুভেন্দু

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভার ঠিক একদিনের মাথায় পশ্চিম মেদিনীপুরে সভা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার তাঁর সভা হয়েছে পিংলার মুন্ডুমারি এলাকায়।
এই জনসভায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন শুভেন্দু অধিকারী।

তিনি বলেন, এ রাজ্যের সরকার ১০০ দিনের কাজ, সড়ক যোজনা ও স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। তিনি বলেন, গরিব মানুষদের বাড়ি করার জন্য ৬৬% অর্থ বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র সরকার, অথচ এখনো এ রাজ্যে খড়ের চালের বাড়ি দেখা যায়। কেন্দ্র যা টাকা দিয়েছে তাতে সকলের পাকা ছাদ হওয়ার কথা। কেন্দ্রের এই প্রকল্পকে এতদিন বাংলা আবাস যোজনা বলে চালানো হয়েছে। কিন্তু বিরোধী
দলনেতাদের খেলায় তা মুছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা করতে হয়েছে, সড়ক যোজনার ক্ষেত্রেও বাংলা সড়ক যোজনা লিখেছিল এই সরকার। পরে তা মুছিয়ে ছেড়েছি। শৌচালয় তৈরীর ক্ষেত্রেও নির্মল বাংলা মিশন লেখা হয়েছিল সেগুলিও স্বচ্ছ ভারত অভিযান লিখতে বাধ্য করছি।

শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে এইসব প্রকল্পগুলি রাজ্যের বলে চালিয়ে ভোট নিয়েছে। এবার ধীরে ধীরে মুখোশ খুলছে। এখনো পর্যন্ত ১১ লক্ষ ২৬ হাজার বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে কাটমানি নিয়ে দলের নেতাদের বাড়ি তৈরি করেছে, আর সাধারণ গরিব মানুষ অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়েছে। আমফান দুর্যোগের পর পানের বরজ ঠিক করার জন্য পনেরো হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকাও লুট হয়েছে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হওয়ায় সেই টাকা কেন্দ্র বন্ধ করেছে। এখন যেভাবে সেই টাকার জন্য চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের কাছে প্রমাণ হচ্ছে যে এইসব টাকা কেন্দ্রের দেওয়া টাকা। এ পর্যন্ত সত্তর লক্ষ জব কার্ড এ রাজ্যে আধার লিঙ্ক করা যাচ্ছে না, ফলে সেগুলো যে ভুয়ো তা প্রমাণ হচ্ছে। দিদির ভূতেরা এইসব ভুয়ো কার্ডের টাকা লোপাট করছে।

শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এমনিতেই বাংলায় কাজ নেই। বাংলার বাইরে গেলেও এখন জব কার্ড গুলিতে আধার লিঙ্ক দরকার হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, তৃণমূল হচ্ছে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, আর এর মালিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভাইপো। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য ভালো চিত্রনাট্য রচনা করেছে। নাটক সাজানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে নতুন তৃণমূল স্বচ্ছ লোকদের মনোনয়ন দেবে যেন তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রথম পঞ্চায়েতে লড়তে যাচ্ছে। আসলে সবটাই জনতাকে টুপি পরানো। এতদিন মুসলিমদের টুপি পরিয়ে ভোট নিয়েছে এখন নৌশাদ সিদ্দিকির টুপি নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে।

একদিন আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি কেশপুরের সভাকে এখনও পর্যন্ত তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ সভাও বলেছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। পঞ্চায়েত ভোটের আবহে ‘রাম-বাম’ জোট নিয়ে তোপ দেগেছিলেন। মনোনয়ন জমা দিতে কোনও সমস্যা হলে বিরোধীদের ‘পাশে দাঁড়ানোর’ বার্তাও দিয়েছিলেন। সমস্যা সমাধানে দিয়েছেন মোবাইল নম্বর। এবার তার ঠিক একদিনের মাথায় সেই পশ্চিম মেদিনীপুরেই সভা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেলায় অভিষেক-শুভেন্দুর পরপর সভা নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.