৭ বছর আগে ‘মৃত’ মহিলা আচমকাই ‘জীবিত’! অথচ তাঁকে খুনের অভিযোগে জেল খাটছেন এক জন

বছর সাতেক আগে আলিগড়ের মন্দিরে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বছর পনেরোর এক কিশোরী। নিখোঁজ হওয়ার কয়েক দিন পর এলাকায় একটি দেহ উদ্ধার হয়। দেহটিকে মেয়েটির বাবা-মা তাঁদের মেয়ের বলেই শনাক্ত করেন। এ বার সেই নিখোঁজ কিশোরীকে খুঁজে পাওয়া গেল উত্তরপ্রদেশের হাথরসে। এখন তিনি তরুণী। দিব্যি সংসার পেতেছেন। দু’টি সন্তানও রয়েছে তাঁর। অন্য দিকে, তাঁকে ‘খুনের দায়ে’ গত সাত বছর ধরে জেল খাটছেন অন্য এক যুবক!

২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোরীর বাবা পুলিশের কাছে একটি নিঁখোজ ডায়েরি করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৬৩ এবং ৩৬৬ অনুযায়ী, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ২৪ মার্চ পুলিশ একটি অজ্ঞাতপরিচয় দেহ উদ্ধার করে। ওই কিশোরীর বাড়ির লোক দেহটিকে শনাক্ত করেন। মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে, ধনথাউলি গ্রামের বাসিন্দা বিষ্ণুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ এবং খুনের অভিযোগ এনেছিল মেয়েটির পরিবার। তাঁদের দাবি অনুযায়ী, বিষ্ণুকেই সর্বশেষ তাঁদের মেয়ের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বিষ্ণুর বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে পুলিশ। বিচার শেষে আদালত বিষ্ণুকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেয়। তখন থেকেই তিনি জেলেই রয়েছেন।

অন্য দিকে, বিষ্ণুর মা তাঁর ছেলেকে নিরপরাধ প্রমাণের জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অনেক খোঁজাখুজির পর তিনি জানতে পারেন যাকে খুনের দায়ে তাঁর ছেলে জেল খাটছেন, সে এত দিন ধরে আগরাতে বসবাস করছে। মেয়েটির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি স্থানীয় একটি সংগঠনের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। ওই সংগঠনের সাহায্যেই মেয়েটিকে হাথরস থেকে আটক করা হয়। তাঁর পরিচয় নির্ধারণ করতে ডিএনএ টেস্ট করা হবে। স্পেশাল পকসো কোর্টও তাঁর ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছে।

যাঁকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই মেয়ে এখন তরুণী। স্বামী এবং দুই সন্তান নিয়ে সংসার করছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর জেলবন্দি বিষ্ণুকে রেহাই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁর মা। তরুণীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বিষ্ণুর মায়ের দাবি, পুলিশি ঝামেলা এড়িয়ে মামলাটি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য তরুণীর বাড়ি থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে তাঁকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.