ভরা গ্রীষ্মে হঠাৎ উইকেট বিক্রি তরতর করে বেড়ে যাওয়ায় মুর্শিদাবাদের ডোমকলের অনেক ক্রীড়া ব্যবসায়ীই অবাক। সূত্রের খবর, গোটা ডোমকল মহকুমায় প্রায় সাড়ে ৫০০ উইকেট বিক্রি হয়েছে দিন কয়েকের মধ্যে। খেলার সরঞ্জাম বিক্রি হয় এমন একটি দোকানের মালিকের কথায়, উইকেট বিক্রি আচমকা বেড়ে গেলেও, ব্যাট বা বল বিক্রি হয়ইনি বলতে গেলে। তা হলে শুধু উইকেট বিক্রি কেন এত বাড়ল, সে প্রশ্নের জবাবে সবাই চুপ। তবে ঘটনাচক্রে, শনিবার ডোমকলে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেসের সংঘর্ষের সময় অনেকের হাতেই উইকেট দেখা গিয়েছে।
ডোমকল ব্লক তৃণমূলের সভাপতি হাজিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘দিনভর সামাজিক মাধ্যমে শনিবারের তাণ্ডবের ছবি ঘুরেছে। তাতে মুখগুলো দেখলেই বোঝা যাবে কারা উইকেট হাতে সে দিন ঘুরেছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ডোমকলের খুনের রাজনীতি তৃণমূলের আমলেই বন্ধ হয়েছিল। সিপিএম-কংগ্রেস সেটা ফেরাতে চাইছে। আর সেই জন্যই ‘উইকেট ফেলতে’ উইকেটের ব্যবহার করছে তারা।’’ তার জবাবে ডোমকলের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘খেলা হবে বলে স্লোগান তো তোলাই হয়েছিল। তবে আমরা সেই স্লোগান তুলিনি, খেলার সরঞ্জামও রাজনীতির মাঠে ব্যবহার করি না। আমাদের কমরেডরা পতাকা বাঁধার জন্য যেটুক ডান্ডার প্রয়োজন হয়, সেটাই ব্যবহার করেছেন। খেলা হবে স্লোগান, কোদালের বাট, উইকেট এ সব তৃণমূলের সংস্কৃতি।’’ পোড় খাওয়া এক রাজনৈতিক নেতার কথায়, ‘‘উইকেট অস্ত্র হিসেবে ভয়ঙ্কর।’’
পুলিশের অবশ্য দাবি, এ ধরনের লাঠি বা উইকেট হাতে যারাই তাদের নজরে পড়েছে, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, মাত্র কয়েক দিনে ৫০ টাকার উইকেট ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এবং হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘এখন তো ক্রিকেটের তেমন চাহিদা নেই। গোটা পঞ্চাশেক উইকেট মজুত ছিল আমার দোকানে। সবই টেনিস বলে ক্রিকেট খেলার উইকেট। শনিবার সকালে ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝলাম, এরা আদতে ক্রিকেটের নয়, রাজনীতির ময়দানের খেলোয়াড়।’’ জেলার প্রবীণ ক্রীড়াবিদ ধীমান দাস বলছেন, ‘‘আদতে এখন মাঠের খেলা তো প্রায় উঠে গিয়েছে। সরঞ্জামগুলি এখন রাজনীতির খেলার মাঠে ব্যবহার হচ্ছে।’’