রাজ্য সরকারি সংস্থার সিইও পদের জন্য ৫০ লক্ষ, আরও বড় সরকারি পদের জন্য ৭০ লক্ষ এবং সরকারি জমি বিনামূল্যে বরাদ্দের জন্য আড়াই কোটি টাকা। প্রকাশ্যে এল ঝাড়খণ্ড সরকারের চাকরি এবং জমি সংক্রান্ত ‘রেট কার্ড’। আর তা দেখেই চোঁখ ধাঁধিয়েছে ইডির তদন্তকারীদের। ইডি মনে করছে, সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ক্ষমতায় থাকার সময়েই নিয়োগ এবং জমি সংক্রান্ত এই দুর্নীতি হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, হেমন্তের কয়েক জন ‘সহযোগী’র বাজেয়াপ্ত করা ফোন এবং হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট থেকে এই ‘রেট কার্ড’ সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করা হয়েছে। হোয়াট্সঅ্যাপ বার্তায় বিভিন্ন ‘কোড’-এর উল্লেখ রয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। হোয়াট্সঅ্যাপ বার্তায় লক্ষ টাকা বোঝাতে ‘ফাইল’ এবং কোটি টাকা বোঝাতে ‘ফোল্ডার’ শব্দ দু’টি ব্যবহার করা হত বলেও দাবি করেছে ইডি।
ইডির অভিযোগ, রেট কার্ড সংক্রান্ত কথোপকথন ঝাড়খণ্ড সরকারের সচিবের পদে থাকা কয়েক জন আমলা এবং ঝাড়খণ্ডের কয়েক জন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঘটেছে।
একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্র দাবি করেছে, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বদলির জন্যও ‘রেট’ নির্দিষ্ট করা ছিল। এই নিয়ে একটি র্যাকেট চলত বলেও ইডির দাবি। ইডি দাবি করেছে, পছন্দমতো জায়গায় বদলি পেতে ৫০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত দিতে হত সরকারি আধিকারিকদের।
গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারের কাছে একটি ৩৫ পৃষ্ঠার চিঠি পাঠিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ তছরুপের অভিযোগ জানিয়েছিল ইডি। আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করার জন্য রাজ্যকে অনুরোধও করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। তবে রাজ্য এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ করেছে ইডি।
উল্লেখযোগ্য, জমি জালিয়াতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। ৬০০ কোটি টাকার ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ রয়েছে হেমন্তের বিরুদ্ধে। সেই তদন্তের সূত্রে ৩১ জানুয়ারি হেমন্তের রাঁচীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশির পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন হেমন্ত।