তপোবন সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার আরও ৫ দেহ, মৃত্যু বেড়ে ৬৭

উত্তরাখণ্ডের তপোবন সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার আরও পাঁচটি দেহ । সব মিলিয়ে এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬৭। হিমবাহ ভেঙে ভয়াবহ বিপর্যয়ের পরে কেটে গেছে ১৫ দিন, এখনও বিরাম নেই দেহ উদ্ধারের। রবিবার জানা গেছে, শনিবার সন্ধেয় উত্তরাখণ্ডের তপোবন জলবিদ্যুত প্রকল্পের সুড়ঙ্গ থেকে তিন জন শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করা হয় । গভীর রাতে পাওয়া যায় আরও দু’জনকে। এই পাঁচজনের কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি। সব মিলিয়ে এপর্যন্ত উদ্ধার হওয়া ৬৭ জনের মধ্যে ৩৪ জনকে শনাক্ত করা গেলেও বাকি ৩৩ জনের নাম পরিচয় জানা যায় নি । এই ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ১৩৭ জন ।  নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার কাজ জারি রয়েছে । তবে সুড়ঙ্গ থেকে জল বের হওয়ায় উদ্ধার কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।    এ দিন আরও দেহ উদ্ধারের পর উদ্ধারকাজের গতি আরও বাড়ানো হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন উদ্ধারকারীরা। প্রায় আড়াই কিলোমিটার লম্বা টানেল। আইটিবিপি-র জওয়ানরা বলছেন, ‘ইউ’ আকৃতির সুড়ঙ্গটা প্রায় ১২ থেকে ১৫ ফুট হবে। ভেতরে বন্যার জলের মাটি, পাথর, কাদা জমে পথ আরও দুর্গম করে তুলেছে। কোথায় খাদ তৈরি হয়েছে বোঝা যাচ্ছে না। তার ওপর সুড়ঙ্গের মাথায় কংক্রিটের পাথর ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। বন্যার জলের তোড়ে মাটি নরম। যখন তখন টানেলের ছাদ হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়তে পারে। বিপদ মাথায় নিয়েই ভেতরে আটকে থাকা বিপন্ন মানুষগুলোকে খুঁজে চলেছেন জওয়ানরা।  তপোবন সুড়ঙ্গের ভেতরে ঢুকে পড়েছেন আইটিবিপি, এনডিআরএফ ও এসডিআরফের জওয়ানরা। কাদা-পাথর, মাটি সরিয়ে পথ তৈরি করা হচ্ছে সুড়ঙ্গের ভেতরে।এদিকে সুড়ঙ্গের বাইরে অপেক্ষা করছে মেডিক্যাল টিম। অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে পৌঁছে গেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। মাটি কাটার বড় বড় যন্ত্র তৈরি রাখা হয়েছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলের জওয়ানরা বলছেন, জল আর পাথরে সুড়ঙ্গের ভেতরটা বিপদসঙ্কুল হয়ে উঠেছে। এখনও অবধি শুধু মৃতদেহই উদ্ধার হয়েছে। সুড়ঙ্গের ভেতরে জীবিত কেউ আটকে আছেন কিনা তার হদিশ মেলেনি।উল্লেখ্য, এ মাসের ৭ তারিখে উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার জোশীমঠের কাছে নন্দাদেবী হিমবাহ ফেটে তীব্র জলোচ্ছ্বাসের জেরে ভেসে গিয়েছে একের পর এক গ্রাম। রেনি গ্রামে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প-সহ ওই এলাকার ৪টি ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়েছে। এনটিপিসি-র জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দুটি সুড়ঙ্গে অনেক শ্রমিক কাজ করছিলেন, তাঁদের বেশিরভাগই ভেসে গিয়েছেন জলের তোড়ে। দেহ উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক। এখনও অন্তত ১৩৭ জন নিখোঁজ বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.