লক্ষ্য ছিল ৫০০ রান করার। কিন্তু ওভার শেষ হয়ে যাওয়ায় থেমে যেতে হয় ৪১৯ রানে। অনূর্ধ্ব-১৬ হ্যারিস শিল্ডে নজির গড়েছে ১৫ বছরের আয়ুষ শিন্ডে। জেনারেল এডুকেশন অ্যাকাডেমির হয়ে খেলার সময় ১৫২ বলে এই রান করেছে আয়ুষ। সে ভেঙেছে সচিন তেন্ডুলকরের নজির।
মুম্বইয়ের ক্রস ময়দানে পার্লে তিলক বিদ্যামন্দিরের বিরুদ্ধে খেলা ছিল আয়ুষদের। ব্যাট করতে নেমে ৪৩টি চার ও ২৪টি ছক্কা মেরেছে সে। এই প্রতিযোগিতায় সচিন করেছিলেন ৩৪৬ রান। সেই রান টপকে গিয়েছে আয়ুষ। হ্যারিস শিল্ডে রানের তালিকায় চার নম্বরে রয়েছে সে। শীর্ষে পৃথ্বী শ। মুম্বইয়ের এই ব্যাটার ২০১৩ সালে ৫৪৬ রান করেছিলেন। তার পরে রয়েছেন আরমান জ়াফর (৪৯৮) ও সরফরাজ় খান (৪৩৯)।
ইনিংসের পর আয়ুষ জানিয়েছে, তার আদর্শ বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা। সে বলে, “আমি ৫০০ রান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওভার শেষ হয়ে গেল। তবে এই রানটাও কম নয়। আমার প্রথম লক্ষ্য মুম্বইয়ের অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলা। তার জন্য আমাকে ধারাবাহিক ভাবে রান করতে হবে। আমি রোহিত ও কোহলির বড় ভক্ত। আশা করছি এক দিন ভারতের জার্সি গায়ে খেলতে পারব।”
আয়ুষের বাবা সুনীল শিন্ডে টেনিস বল ক্রিকেট খেলতেন। প্রায় ১০ বছর আগে আয়ুষের জন্যই সাতারা থেকে মুম্বই যান তিনি। সেখানে একটি সোনার গয়না মেরামত করার দোকান রয়েছে তাঁর। পুত্রের কীর্তিতে গর্বিত পিতা বলেন, “ছ’বছর বয়স থেকেই ক্রিকেট ওর ধ্যান-জ্ঞান। তখনই ঠিক করেছিলাম, মুম্বইয়ে আসব। সাতারায় থাকলে ও বেশি সুযোগ পেত না। মুম্বইয়ে এসে বাড়ি ভাড়া নিয়েছি। ছোট্ট একটা দোকান চালাই। আয়ুষ নিজের সুযোগ কাজে লাগিয়েছে। এর থেকে ভাল কিছু হতে পারে না।”
গত বছর মুম্বইয়ের অনূর্ধ্ব-১৪ দলে সুযোগ পেয়েছিল আয়ুষ। দলের সঙ্গে রাজকোটেও গিয়েছিল। কিন্তু খেলার সুযোগ পায়নি। বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল। সুনীল বলেন, “আয়ুষ কোচের কাছে জানতে চেয়েছিল, কেন ওকে খেলানো হচ্ছে না। কোচ বলেছিল, আরও রান করতে হবে। তার পর থেকে ও শুধু খেলা নিয়েই পড়ে আছে। ৫০০ রান করা ওর লক্ষ্য। আয়ুষ আমাকে বলেছে, ‘১০০, ২০০ রান করে কিছু হবে না। আমি এ বার ৫০০ রান করব।’”
কোনও কিছুর জন্যই ক্রিকেটে ফাঁকি দিতে নারাজ আয়ুষ। পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠান থাকলেও অনুশীলন ছাড়ে না সে। ব্যাট সঙ্গে নিয়ে ঘুমায়। এখন থেকেই একটি লক্ষ্যে এগোতে শুরু করেছে আয়ুষ। সেই পথেই একটি মাইলফলক জুড়েছে হ্যারিস শিল্ডে।