3000 year old Egyptian mummy: অবিশ্বাস্য! মৃত্যুর ৩০০০ বছর পর জেগে উঠল মমি, জানাল শেষ ইচ্ছা…

মিশরের প্রাচীন শহর থিবসের কারনাকে সূর্য এবং বায়ুর দেবতা ‘আমান’এর মন্দির ছিল। সেই মন্দিরেরই পুরোহিত ছিলেন নেসিয়ামান। প্রায় তিন হাজার বছর আগে মন্দিরেই মৃত্যু হয় সেই পুরোহিতের। এরপর মমি করে রাখা হয় সেই পুরোহিতকে। তিন হাজার বছর আগে মৃত সেই পুরোহিতকে ফের ‘বাঁচিয়ে’ তুললেন বিজ্ঞানীরা। এখানেই শেষ নয়, মৃত্যুর প্রায় ৩ হাজার বছর পর তাঁর শেষ ইচ্ছের কথাও শুনলেন বিজ্ঞানীরা। এত বছর পর ‘বেঁচে উঠে’ কী বললেন ওই পুরোহিত? আর কী ভাবেই বা তা সম্ভব করলেন বিজ্ঞানীরা?

মৃত্যুর সময়ে তাঁর শেষ ইচ্ছা কী ছিল, তা তিনি এত বছর পর ‘জীবিত’ হয়ে জানালেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তাঁর কণ্ঠ খুব ক্ষীণ এবং অস্পষ্ট হওয়ায় শেষ ইচ্ছার কথা বিজ্ঞানীরা এখনও ভাল করে বুঝতে পারেননি। তবে তিনি যে কিছু শব্দ উচ্চারণ করেছেন তা স্পষ্ট শুনেছেন বিজ্ঞানীরা। খুব তাড়াতাড়ি উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মৃত্যুকালে তিনি ঠিক কী বলতে চেয়েছিলেন, তা সম্পূর্ণ বাক্যের মাধ্যমে উদ্ধার করতে পারবেন তাঁরা। 

কারনাকে দেবতা আমানের মন্দিরের থাকতেন নেসিয়ামান। ওই মন্দিরেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইতিহাসবিদেরা জানিয়েছেন, শেষ জীবনে মুখে সংক্রমণ হয়ে গিয়েছিল তাঁর। মুখের সংক্রমণের জন্য শেষ জীবনে তিনি কথা বলতে পারতেন না। খুব কষ্টে কিছু উচ্চারণ করতে পারতেন মাত্র। সংক্রমণ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, দাঁত, মাড়ি ক্ষয়ে যেতে শুরু করেছিল। এই সংক্রমণ থেকেই সারা দেহে মারাত্মক আলার্জি হয়ে যায়। মাত্র ৫০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। সেই দেহ মমি করে রাখা হয়। 

১৮২৩ সালে মমিটা উদ্ধার করে ইংল্যান্ডের লিডস সিটি মিউজিয়ামে দর্শকদের জন্য প্রদর্শন করে রাখা হয়। এই মমি নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা চালিয়েছেন। সে সময়ের মিশর সম্পর্কে অনেক তথ্য এই মমি থেকে মিলেছে। ব্যবচ্ছেদ এবং এক্স-রে ব্যবহার করে তাঁর রোগ সম্পর্কেও তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামে এক জার্নালে মৃত্যুর তিন হাজার বছর পর ওই মমির কথা বলার উল্লেখ রয়েছে। 

জানা যায় যে থ্রিডি প্রিন্টার ভোকাল বক্সের মাধ্যমে মমিকে কথা বলিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মানুষের ল্যারিংসে শব্দ তৈরি হয়। আর ভোকাল ট্র্যাক প্যাসেজে সেই শব্দ ফিল্টার হয়ে অর্থপূর্ণ শব্দ তৈরি করে। এই পুরো বিষয়টাকে একসঙ্গে মানুষের ভয়েস বক্স বলা হয়। তিন হাজার বছর আগে নেসিয়ামান শেষ যে কথাটা বলেছিলেন, তা জানার জন্য প্রথমে বিজ্ঞানীরা তাঁর ভোকাল ট্র্যাকের ডাইমেনশন ৩ডি-প্রিন্টারে কপি করেন। তবে এই পদ্ধতি তখনই সম্ভব, যদি মৃত ব্যক্তির ভোকাল ট্র্যাকের নরম কোষগুলো অক্ষত থাকে। এক্ষেত্রে তাঁর ভোকাল ট্র্যাকের কোষগুলো অক্ষত রয়েছে।

ওই মমির ভোকাল ট্র্যাকের কপি করে ল্যারিংসে কৃত্রিম ভাবে তাঁর কণ্ঠস্বর তৈরি করা হয়। সেখানেই ক্ষীণ কণ্ঠে ‘বেড’ বা ‘ব্যাড’ জাতীয় কিছু শব্দ উচ্চারণ করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। এটাই ছিল তাঁর মৃত্যুর আগে শেষ কথা। এই কথার অর্থ জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। সবেমাত্র একটি শব্দ, তবে এভাবেই শেষ বাক্য জানারও চেষ্টা চলছে। তা সম্ভব হলে, মৃত্যুর তিন হাজার পর জানা যাবে ওই ব্যক্তির শেষ ইচ্ছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.