নতুন ৩ সংস্থার বিমান ভারতে উড়তে পারে আগামী বছরেই! ছাড়পত্র দিল কেন্দ্র, ইন্ডিগোর উপর অতিনির্ভরতা কি কমবে?

আগামী বছরেই ভারতের আকাশে উড়তে পারে তিন নতুন সংস্থার বিমান। ইতিমধ্যে ওই তিন সংস্থাকে উড়ানের জন্য ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। বর্তমানে বিমান পরিষেবার দেশীয় বাজারের প্রায় সিংহভাগই রয়েছে ইন্ডিগোর দখলে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই দেশীয় উড়ান পরিষেবার ক্ষেত্রে ইন্ডিগোর উপরেই বেশি নির্ভরতা রয়েছে যাত্রীদের। নতুন উড়ান সংস্থাগুলি চালু হওয়ার পরে এই অতিনির্ভরতা কি কমবে? তা নিয়েও কৌতূহল দানা বাঁধতে শুরু করেছে।

এই তিনটি সংস্থা হল— শঙ্খ এয়ার, আল হিন্দ এয়ার এবং ফ্লাই এক্সপ্রেস। এর মধ্যে শঙ্খ এয়ারকে আগেই উড়ানের ছাড়পত্র দিয়ে রেখেছে কেন্দ্র। চলতি সপ্তাহে বাকি দুই সংস্থাকেও ছাড়পত্র দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। সব ঠিক থাকলে আগামী বছর থেকেই উড়ান পরিষেবা শুরু করে দিতে পারে এই তিন সংস্থা।

বর্তমানে ভারতের আকাশে ৯টি উড়ান সংস্থার বিমান ওড়ে। গত অক্টোবরে ফ্লাই বিগ নামে এক দেশীয় সংস্থা পরিষেবা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলির মধ্যে মূলত দু’টি সংস্থারই আধিপত্য রয়েছে দেশীয় বাজারে। ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া গোষ্ঠী (এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস)— এই দুই সংস্থাই আধিপত্য রয়েছে দেশীয় বাজারের ৯০ শতাংশের উপরে। এর মধ্যে শুধু ইন্ডিগোর ‘দখল’ রয়েছে দেশীয় বাজারের প্রায় ৬৫ শতাংশ জুড়ে। সম্প্রতি দেশ জুড়ে ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবা বিপর্যস্ত হওয়ার পরে বাজারে দুই সংস্থার আধিপত্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বস্তুত, অন্য বিমান সংস্থাগুলির তুলনায় এত দিন কিছুটা সস্তায় যাত্রীদের উড়ান পরিষেবা দিত ইন্ডিগো। দেশের ৯০টি এবং বিদেশের ৪৫টি বিমানবন্দরে পরিষেবা দেয় তারা। ফলে ইন্ডিগোর শ’য়ে শ’য়ে বিমান বাতিল হওয়ায় ভোগান্তির মধ্যে পড়েন বহু যাত্রী।

গত বছর জানুয়ারিতে পাইলট এবং বিমানকর্মীদের কাজের সময় এবং বিধি নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল ভারতের উড়ান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। ওই বিধি অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে পাইলট এবং বিমানকর্মীদের বিশ্রামের জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে মাত্র দু’টি বিমান রাতে অবতরণ করাতে পারবেন এক জন পাইলট (আগে সংখ্যাটা ছিল ছয়)। তা ছাড়া ওই বিধিতে বলা হয়, পাইলট এবং বিমানকর্মীদের পর পর দু’দিন নাইট ডিউটি দেওয়া যাবে সপ্তাহে এক বারই। ইন্ডিগোর অনেক বিমানই রাতে অবতরণ করে। ফলে ডিজিসিএ-র ওই বিধিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ইন্ডিগোই। নয়া বিধি মেনে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে যত সংখ্যক কর্মী এবং পাইলট প্রয়োজন, তা ইন্ডিগোর ছিল না। ফলে দেশব্যাপী বহু বিমান বাতিল করতে হয় উড়ান সংস্থাকে।

ইন্ডিগোর পরিবেষা বিভ্রাট নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে কেন্দ্রও। এরই মধ্যে তিন নতুন উড়ান সংস্থার বিষয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নায়ডু। মন্ত্রী জানান, গত সপ্তাহে তিন নতুন উড়ান সংস্থার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। শঙ্খ এয়ার-কে আগেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহে আল হিন্দ এয়ার এবং ফ্লাই এক্সপ্রেসও ছাড়পত্র পেয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.