সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আগেই আরজি কর থেকে সরে গিয়েছে ২৯ জন সিভিক ভলান্টিয়ার

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আগেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সিভিক ভলান্টিয়ারদের। লালবাজার সূত্রের খবর, দুর্গাপুজোর ঠিক আগে আর জি করে কর্মরত ২৯ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় লালবাজার থেকে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়া হচ্ছে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারদের অন্যত্র কাজে লাগানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তবে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে শহরের বাকি সরকারি হাসপাতালগুলি থেকে কবে সিভিক বাহিনীকে সরানো হবে, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

উল্লেখ্য, আর জি করে চিকিৎসক-ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ হাসপাতাল এবং স্কুলের মতো সং‌বেদনশীল জায়গায় সিভিক বাহিনী মোতায়েন করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, আর জি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে ইতিমধ্যেই পুলিশবাহিনী যৌথ ভাবে মোতায়েন রয়েছে। ফলে, সেখান থেকে সিভিক বাহিনীকে তুলে নিলেও নিরাপত্তা সংক্রান্ত অসুবিধা হবে না। কিন্তু অন্য হাসপাতালগুলিতে সিভিকদের সরিয়ে কী ভাবে অবস্থা সামাল দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, কলকাতা পুলিশ বাহিনীতে প্রায় ছ’হাজার শূন্য পদ রয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতার সব সরকারি হাসপাতালে গড়ে ২০-৩০ জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রয়েছেন। যাঁরা মূলত পুলিশকর্মী এবং হোমগার্ডদের পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ রাখেন।

গত ৯ অগস্ট আর জি কর-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। ওই হাসপাতালে কোনও ডিউটি না থাকলেও সে যে সেমিনার-কক্ষে গিয়েছিল, তার প্রমাণ মিলেছে। এর পরেই হাসপাতালে সিভিকদের ডিউটি ও তাঁদের অবাধ গতিবিধি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের তরফে সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানুয়ারি থেকে তা শুরু হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে সিভিক-সম্পর্কিত একাধিক বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা আকারে রিপোর্ট চেয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

লালবাজার জানিয়েছে, আর জি করের ঘটনার পরেই শহরের হাসপাতালগুলিতে কোথায় কোথায় সিসি ক্যামেরার নজরদারি প্রয়োজন, তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই মতো আর জি করে নতুন করে প্রায় ৫০০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আগে ১৯৯টি সিসি ক্যামেরা ছিল ওই হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায়। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, হাসপাতালের মূল ভবনের কিছু জায়গা ছাড়া সব জায়গা সিসি ক্যামেরার নজরদারির অধীনে আনা হয়েছে। এ ছাড়া, হাসপাতালে যে সব বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.