২০০৮ সালের ২৬শে নভেম্বর। দিনটা ছিল শুক্রবার। মুম্বইতে জঙ্গি হানার খবরে কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। সমুদ্রপথে দেশে ঢুকে পড়েছিল সশস্ত্র জঙ্গিরা। আর সেদিনই দেশ দেখেছিল অসম সাহসী এনএসসি কমান্ডোদের দক্ষতা। জীবনকে বাজি রেখে সেদিন তাঁরা দেশকে রক্ষা করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁদের সেই বীরগাথা আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। তেমনই এক বীরের কাহিনি আজ। এসএসজি চিফ জ্যোতি কৃষ্ণ দত্ত। সেদিন দেশের সেই এলিট কমান্ডো ফোর্সকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পড়েছিল তাঁর উপরেই। ১৯৭১ ব্যাচের আইপিএস। ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্যাডারের অফিসার। ২০০৬ সালের ১১ই অগস্ট থেকে ২০০৯ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি, এনএসজির ডিরেক্টর জেনারেল পদেও ছিলেন তিনি। চলতি বছরের মে মাসে কোভিডে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর পুত্র অনুজ সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন সেদিনের স্মৃতি।
অনুজ বলেন, আমি কলম্বোতে গিয়েছিলাম একটি মিটিংয়ে। তখনও জানতাম না দেশে কী হচ্ছে। অনেকেই জানেন না সেদিন বাবার কাছে অজস্র ফোন আসছিল। সকলেই বলছিলেন তাঁদের আত্মীয়, বন্ধুরা আটকে আছেন। বাবা সকলের উত্তর দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়দিন বাবা জেনেছিলেন একটি হোটেলেতাঁর এক আত্মীয়কেও খুন করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু তিনি এরপরেও ডিউটি ছেড়ে বেরিয়ে আসেননি। সেদিন বার বার মিডিয়ার ফোন আসছিল। বাবা একটাই উত্তর দিয়েছিলেন, যদি সরাসরি প্রশ্ন করেন, আমি উত্তর দেব। যদি ইন্টারভিউ করতে চান, তবে ছেড়ে দিন। কারণ একদিকে সরকার, অন্যদিকে বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন বাবা। এক জায়গায় থেকে অপর জায়গায় ছুটে যান তিনি। কিন্তু একটা প্রশ্ন তাঁকে ভাবিয়েছিল, নরিম্যান হাউসে যাওয়ার রাস্তা খুব জটিল। সেখানে জঙ্গিরা গেল কী করে? অবসরের পরেও বাবা বলতেন অতিরিক্ত কোনও সহায়তা হয়তো জঙ্গিরা পেয়েছিল।