বীরভূম(Birbhum) জেলার সিউড়ি(Suri) সদর মহকুমার সাঁইথিয়া(Snaithia) থানার ভ্রমরকোল গ্রাম পঞ্চায়েতের(Vromorkol GP) নোয়াপাড়া গ্রামে এক আদিবাসী দম্পতিকে(Tribal Couple) ডাইনি অপবাদে পিটিয়ে মেরে(Murder) ফেলার ঘটনায় জল অনেকটাই ঘোলা হয়েছে।
এই ঘটনায় রীতিমত প্রশ্নের মুখে পড়েছে জেলার পুলিশ প্রশাসন। কেননা এই ঘটনা যে ঘটতে চলেছে তা নিয়ে পুলিশের কাছে আগে থেকে কোনও খবর এসে পৌঁছায়নি। অথচ এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড যে রীতিমত পরিকল্পনা মাফিক ঘটানো হয়েছে তা আর বলার অবকাশ রাখে না। আর সেই ঘটনার জেরেই এবার জেলা পুলিশ প্রশাসনের তরফে সাঁইথিয়া থানার অধীনে থাকা আমোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ১৭জন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে(Civic Volunteer) সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এত বড় ঘটনা সত্ত্বেও ওই ১৭জন সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাছে কেন কোনও তথ্য ছিল না, এই অভিযোগেই তাঁদের Dimobilaization বা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ফলে তাঁরা পরবর্তী নোটিস না পাওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে পারবেন না। ঊর্ধ্বতন অফিসারদের ওই ঘটনা সংক্রান্ত কোনও তথ্যই তাঁরা জানাননি বলেই তাঁদের এই শাস্তি বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, নোয়াপাড়া গ্রামে বেশ কয়েকজন মিলে বৃদ্ধ দম্পতি পেন্দা হেমব্রম ও পার্বতী হেমব্রমকে পিটিয়ে খুন করা হয়। ডাইনি অপবাদ ও বারণ করা সত্ত্বেও গ্রামে পচুই মদ বিক্রি করায় তাঁদের পিটিয়ে খুন করা হয়। এখনও পর্যন্ত দম্পতিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় মোট ৭জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে এলাকা একেবারে থমথমে। গ্রামের ওই পাড়ার অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। বাইরের কারও সঙ্গে কেউ কোনও কথা বলতে চাইছেন না। পাড়ায় একটি ক্যাম্প করেছে পুলিশের।
সিভিক পুলিশদের সাময়িক বরখাস্তের ঘটনা প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আমাদের কাছে আরও আগে তথ্য পৌঁছলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু সময়মতো সঠিক তথ্য আসেনি। তাই কিছুদিনের জন্য মোট ১৭জনকে Dimobilaization করা হয়েছে। এই কয়েকদিন তাঁরা কেউই কাজে যুক্ত থাকবে পারবে না।’ উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরেই আমোদপুর পুলিশ ফাঁড়িকে সাঁইথিয়া থানা থেকে আলাদা করে পূর্ণাঙ্গ একটি থানার রূপ দেওয়ার দাবি রয়েছে। আদিবাসী দম্পতিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনার পরে সেই দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।