উলুবেড়িয়া ও সংলগ্ন এলাকার মানুষকে অত্যাধুনিক চিকিৎসার সুযোগ দিতে যাত্রা শুরু করল একটি আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল।
আমাদের প্রাণের শহর কলকাতা স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চেন্নাই, মুম্বাই বা দিল্লির সমমানের হলেও রাজ্যের জনসংখ্যার নিরিখে এখানে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ অপ্রতুল। আবার কলকাতা ছাড়া দুর্গাপুর, বা শিলিগুড়ির বাইরে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, সুপার স্পেসালিস্ট ডাক্তারবাবু সমন্বিত হাসপাতালের খুবই অভাব। তাই মানুষকে প্রয়োজনে দূর দূরান্ত থেকেও কলকাতায় নিয়ে আসতে হয়, এর ফলে অনেক সময়ে বিপদও ঘটে যায়।
একই অবস্থা কলকাতার অতি কাছের শহর উলুবেড়িয়াতেও। এখানে তথাকথিত নার্সিং হোম ও হাসপাতাল অনেক থাকলেও কোনো মানুষের সর্বশেষ চিকিৎসার সাহায্যে প্রাণ বাঁচাতে কলকাতা নিয়ে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে সানরেস লাইফকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড পরিচালিত আজকের ‘সান মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনিস্টিক সেন্টার’ একটি স্বপ্নেরই বাস্তবায়ন।
সোমবার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রাক্তন ফুটবলার ও উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক বিদেশ রঞ্জন বসু, বাগনান, পাঁচলা ও শ্যামপুরের তিন বিধায়ক অরুণাভ সেন, গুলশন মল্লিক ও কালিপদ মণ্ডল, উলুবেরিয়া পৌরসভার সভাপতি অভয়কুমার দাস, সহ সভাপতি শেখ ইমানুর রহমান সহ কিছু বিশিষ্টজন। সরকারি পদাধীকারী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের প্রাণপুরুষ প্রখ্যাত অর্থোপেডিক সার্জেন ডা: সুদীপ্ত ঘোষ, ডা: কৌশিক সরকার, ডা: দেবাশীষ রায় প্রমুখ।
উলুবেড়িয়ার ওড়িশার ট্রাংক রোডের যেখানে ‘সান মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল, সেটিকে হাসপাতাল পাড়া বললে অত্যুক্তি হয় না। কিন্তু শুরুতে একশকুড়ি শয্যার এই হাসপাতাল শহরের অন্য সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের থেকে সবদিক থেকেই অনন্য। উলুবেড়িয়াতে সর্ব প্রথম এই হাসপাতালই নিয়ে এল ল্যামিনার ফ্লোর যুক্ত তিনটি অত্যাধুনিক মডিউলার অপারেশন থিয়েটার। পেসমেকার বসান বা হাঁটু প্রতিস্থাপনের মতো আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থার সঙ্গে থাকছে অত্যাধুনিক লেবাররুম ও সুলভ ডায়লিসিস ইউনিটও।
মন্ত্রী পুলক রায় ও মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্য বক্তা নতুন এই উদ্যোগকে শুভেচ্ছা জানান ও হাসপাতালের সাফল্য কামনা করেন। হাসপাতালের অন্যতম কর্ণধার ডা: সুদীপ্ত ঘোষ জানান, প্রথমে পঁচিশটি আইসিইউ ও এইচডিইউ শয্যা নিয়ে এবং সঙ্কটাপন্ন নবজাতকদের চিকিৎসার জন্য এনআইসিইউ নিয়ে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট চালু হলেও ভবিষ্যতে আইসিইউ-এর শয্যা সংখ্যা পঞ্চাশটি পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগে যেমন সবসময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুরা থাকবেন তেমনই এখানকার ডায়গনিস্টিক সেন্টারেও থাকবে সব ধরণের রক্ত পরীক্ষা ছাড়াও আলট্রাসোনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, ইকো কার্ডিওলজি, এন্ডোস্কোপি, কোলনোস্কোপি, ইআরসিপি, ইইজির মতো অত্যাধুনিক পরীক্ষার সুযোগও।