Wimbledon: উইম্বলডনে ‘আরব বসন্ত’ হল না! মহিলাদের নতুন বিজয়ী কাজাখস্তানের রিবাকিনা

উইম্বলডনে দেখা গেল না ‘আরব বসন্ত’। আফ্রিকার খেলোয়াড় হিসাবে গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠেছিলেন ওন্স জাবেউর। এক সেট এগিয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু সুবিধা কাজে লাগাতে পারলেন না তিনি। কাজাখস্তানের এলেনা রিবাকিনার কাছে হারলেন ৬-৩, ২-৬, ২-৬ গেমে।

দু’জনের কাছেই এটা প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনাল ছিল। ফলে ট্রফির স্বাদ কেমন হয়, সেটা কেউই জানতেন না। ওপেন-যুগে উইম্বলডনে মহিলাদের বিভাগে ট্রফিজয়ের ম্যাচ খেলছেন প্রথম বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে ওঠা দুই খেলোয়াড়, এমন ঘটনা আগে দেখা যায়নি। তবু অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতায় বাজি মেরে দিলেন রিবাকিনা। ফাইনালের মতো ম্যাচে এক সেটে পিছিয়ে পড়ে ফেরত আসা সহজ কাজ নয়। সেটাই অনায়াসে করে দেখালেন রিবাকিনা। এক ঘণ্টা ৪৮ মিনিটেই ফাইনালে জাবেউরকে হারিয়ে কাজাখস্তান তথা এশিয়ার প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে উইম্বলডন ট্রফি জিতলেন তিনি। জাবেউর তৃতীয় বাছাই হিসাবে নামলেও রিবাকিনা নেমেছিলেন ১৭তম বাছাই হয়ে। ফাইনালে সব হিসাব-নিকাশ উল্টে দিলেন তিনি।

ফাইনালে ধারে-ভারে অনেকটা এগিয়ে থেকে নেমেছিলেন জাবেউর। একে তো আফ্রিকার প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে উইম্বলডন ফাইনালে উঠেছেন। পাশাপাশি জনসমর্থনও ছিল তাঁর দিকে। শুরুটাও করেছিলেন আগ্রাসী ভঙ্গিতেই। প্রথম সেটের তৃতীয় গেমেই রিবাকিনার সার্ভিস ব্রেক করেন তিনি। নবম গেমে আবার সার্ভিস ব্রেক করে সেট পকেটে পুরে নেন। কোর্টে তখন অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী লাগছিল তাঁকে। এক সময় মনে হচ্ছিল, ট্রফি তোলা সময়ের অপেক্ষা।


দ্বিতীয় সেট থেকে ম্যাচে ফিরতে শুরু করেন রিবাকিনা। শুরুতেই ব্রেক করেন জাবেউরকে। পঞ্চম গেমে আবার ব্রেক। পর পর দু’টি ব্রেক পয়েন্ট ম্যাচে রিবাকিনাকে অনেক এগিয়ে। ফোরহ্যান্ড তাঁর অন্যতম শক্তি। তবে সেই শক্তিকে এ দিন ভোঁতা করে দিলেন রিবাকিনা। তৃতীয় সেটেও একই চিত্র। জাবেউরের সার্ভ ব্রেক করে এগিয়ে যাওয়া রিবাকিনাকে থামানো যাচ্ছিল না কোনও ভাবেই। পিছিয়ে পড়ার পরেও জাবেউর সমর্থন হারাননি। ম্যাচে এক সময় ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। চিৎকার করে নিজেই নিজেকে তাতাতে দেখা যায়। গ্যালারি থেকে নাগাড়ে তাঁর নাম ধরে চিৎকার করছিলেন স্বামী তথা কোচ করিম কামুন। কোনও কিছুই ম্যাচে ফেরাতে পারল না জাবেউরকে। ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েছিলেন। তবে মুকুটে নতুন পালক জুড়তে ব্যর্থ তিনি।

তবে জাবেউরের কৃতিত্ব কোনও অংশে তাতে খাটো হচ্ছে না। উইম্বলডন ফাইনালে হারের পরেও ২০১১ সাল সম্ভবত ভুলতে পারবেন না তিনি। প্রথম বার কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফিতে হাত রেখেছিলেন। তবে সেটি ছিল জুনিয়র গ্র্যান্ড স্ল্যাম। তাঁর দেশ টিউনিশিয়ার কাছেও ২০১১ বছরটা তাৎপর্য্যপূর্ণ। কারণ টিউনিশিয়া থেকেই শুরু হয়েছিল শাসকের বিরুদ্ধে বিপ্লব, গোটা দুনিয়ার কাছে যা পরিচিত ‘আরব বসন্ত’ নামে। এমন দেশ থেকে এসেছেন জাবেউর, যেখানে এখনও মহিলাদের ছোট পোশাক পরা নিষেধ। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করা ছোটবেলা থেকেই তাঁর স্বভাব। তাই কোনও চোখরাঙানি তাঁর এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এখন তিনি শুধু টিউনিশিয়া নয়, গোটা আফ্রিকা মহাদেশের উঠতি টেনিস খেলোয়াড়দের কাছে অনুপ্রেরণা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.