বড়সড় অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জেলায়। বুধবার ঢোলাহাট থানার আমিরপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ওই বিশাল অস্ত্রভান্ডারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরির মশলা এবং অস্ত্র তৈরির নানা সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকে। সেই সঙ্গে দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কিছুদিন আগে ঢোলাহাট থানার আমিরপুর গ্রামে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেই সংঘর্ষে দু’পক্ষের মধ্যে বোমাবাজি হয়। ঘটনার তদন্তে নামে ঢোলাহাট থানার পুলিশ। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে ওই গ্রামেই কোনও এক বাড়িতে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা রয়েছে। যেখান থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত বোমাগুলি কেনা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা এবং জেলার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র এবং বোমা ও গুলি সরবরাহ করা হত।
এই অস্ত্র কারখানার হদিশ পেতে ঢোলাহাট থানার পুলিশ এবং সুন্দরবন জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল যৌথভাবে বুধবার ওই গ্রামে তল্লাশি চালায়।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ গ্রামের বাসিন্দা জাহির মীরের বাড়ি ঘিরে ফেলে। সেই বাড়িতেই অভিযান চালিয়ে এই বিশাল অস্ত্রভান্ডারের হদিশ পায় পুলিশ। গ্রেফতার হয় দুই অস্ত্র ব্যবসায়ী।
সুন্দরবনের পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি জানিয়েছেন, ঢোলাহাট থানার অফিসার ইন-চার্জ, মন্দিরবাজারের ডিএসপি এবং জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এক বিশেষ দল বুধবার অভিযান চালায় ওই বাড়িতে। সেখান থেকে তিনটি বড় রাইফেল, একটি ছোট রিভলবার, দু’টি ওভার সোল্ডার লঞ্চার, তিন হাজারের বেশি তাজা বোমা, বোমা তৈরির মশলা, গান পাউডার, ছ’প্যাকেট বোমায় ব্যবহারের জন্য লোহার বল, ওয়েল্ডিং মেশিন এবং আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির আরও নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
বাড়ির মালিক জাহির মীর এবং মথুরাপুর থানার হরিণবাটির বাসিন্দা এরাদ আলি লস্কর নামে দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অস্ত্র আইনে তাদের বিরুদ্ধে রুজু হয়েছে মামলা। অভিযুক্ত দু’জনকেই বুধবার কাকদ্বীপ এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই অস্ত্র সরবারাহের সঙ্গে আর কে কে যুক্ত তা জানতে ধৃত দুই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে জেরা করছে পুলিশ। ঢোলাহাট থানা থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে গ্রামের মধ্যেই এতবড় অস্ত্র কারখানা দীর্ঘদিন ধরে চলত। অথচ স্থানীয় গ্রামবাসী এবং পুলিশ কিছুই কীভাবে টের পেল না এখন তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।