Sukanta, BJP, যেখানে জনবিন্যাসের বদল হয়ে হিন্দু কমবে সেখানে ভারত বিরোধী কাজ হবে, অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে মমতা ও কল্যাণকে পাল্টা জবাব সুকান্তর

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, বাংলায় জঙ্গি ঢোকাচ্ছেন উত্তর পূর্বের মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি অনুপ্রবেশকারীদের ভোটে জিতেছেন বলেও তোপ দেগেছেন কল্যাণ। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানসিক সুস্থতা কামনা করেছেন সুকান্ত মজুমদার। অন্যদিকে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে যে ভাবনার ফারাক রয়েছে সেটাও স্পষ্ট করেছেন।

অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে কেন্দ্রের মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যারা এদেশে ঢোকেন তাদের সকলকেই ওরা (তৃণমূল) অনুপ্রবেশকারী বলে মনে করে। আমরা সেটা মনে করি না। আমরা মনে করি যারা ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত হয়ে, অত্যাচারিত হয়ে, অর্থাৎ এককথায় হিন্দু এবং বৌদ্ধ- জৈন- খ্রিস্টান বাংলাদেশে যারা সংখ্যালঘু, যারা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছে তারা সবাই এদেশের নাগরিক হবার অধিকার রাখে। তাঁর মতে এরা কমপক্ষে উদ্বাস্তু হিসেবে আশ্রয় পাওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু উন্নত জীবনের জন্য বাংলাদেশে যারা সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্থাৎ মুসলিম, যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকছে তাদেরকে আমরা উদ্বাস্তু মনে করি না, তাদেরকে অনুপ্রবেশকারী বলে মনে করি।

এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, জঙ্গি ঢোকাচ্ছে বিএসএফ এবং তারা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে সমস্যা তৈরি করছে। এর পাল্টা জবাব দিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এখানে যারা ধরা পড়েছেন যারা উগ্রপন্থী। তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে ভোট প্রচার করেন‌। এই উগ্রপন্থীরা যেখান থেকে ধরা পড়েছেন যেখানে তারা আশ্রয় পেয়েছেন সেই এলাকায় তৃণমূলের ভোট কত এবং বিজেপির ভোট কত? বিজেপি যদি এই লোকগুলোকে ঢোকাতো, তাহলে তো তারা বিজেপি এলাকা থেকে ধরা পড়তো। এরা ধরা পড়ছে সেই সব জায়গায় যেখানে ১০০ জনের মধ্যে ৯৯ জন তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেয়। সেই সব জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ছাড়া অন্য কোনো দলের নেতা নেই বললেই চলে। পরিষ্কার কথা তৃণমূলের হয়ে এরা ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করে। তৃণমূলের হয়ে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ককে এরা সুরক্ষিত করে। তার ফল স্বরূপ তৃণমূল কংগ্রেস এদের ভারত বিরোধী কার্যকলাপ চালাতে দেয়।

এদিকে চিকেন নেককে দখল করার চেষ্টায় ধুবরি হামলার চেষ্টা ছিল। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ধুবরির জনবিন্যাস পাল্টে গেছে। এক সময় সেখানে বদরুদ্দিন আজমল এমপি ছিলেন। তিনি এবার জিততে পারেননি। কিন্তু জনবিন্যাস বদলে গেছে। ভারতবর্ষের যে যে জায়গায় জনবিন্যাস বদলেছে সেইসব এলাকা ভারত বিরোধী কাজে নেমে পড়েছে। এটা বারবার প্রমাণিত। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতা সেকুলারিজমের ভান করার জন্য এ বাস্তব সত্যকে স্বীকার করতে চায় না। ভারতবর্ষের চিকেন নেক শিলিগুড়িকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য এর আগেও পরিকল্পনা নিয়েছেন উগ্রপন্থীরা। মুর্শিদাবাদে লিফলেট বিলি হয়েছে ১৯৪৭- এর আগে মুর্শিদাবাদে যে পরিস্থিতি ছিল, সেই জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন এই লিফলেট কি করে বিলি হল? উত্তরে সুকান্ত মজুমদার বলেন, যেখানে জনবিন্যাসের বদল হবে, যেখানে হিন্দুর সংখ্যা কমবে সেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকবে না, বহুত্ববাদ থাকবে না।

অন্যদিকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, দিল্লি পুলিশ মানে অমিত শাহের পুলিশ কেন্দ্র যা বলছে সে অনুযায়ী বিএসএফের ব্যর্থতা স্পষ্ট। উত্তর-পূর্ব দিয়ে বাংলাদেশীরা ঠুকছে। নর্থ-ইস্টের মন্ত্রী সুকান্ত। তার মানে উনি করাচ্ছেন এসব। জঙ্গি আনছেন সুকান্ত। যে দশ হাজার ভোটে জিতেছেন সেটা অনুপ্রবেশকারীদের ভোট। যদিও কল্যাণবাবুর এই মন্তব্যকে প্রলাপ বলে পাল্টাতে জবাব দিয়েছেন সুকান্ত। তিনি বলেছেন কল্যাণ বাবুর উপর তৈরি হওয়া প্রবল চাপের বহিঃপ্রকাশ এটা। তোষনের সংসারে আবদ্ধ থাকলেও দিনের শেষে তিনি দুর্গা মাতার সন্তান। কায় মনো বাক্যে তার মানসিক সুস্থতা কামনা করেছেন সুকান্ত মজুমদার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.