এক সপ্তাহের লড়াই থেমে গেল। আধপোড়া শরীরটা আর সাড়া দিতে পারছিল না। আজ, শনিবার সকালে হাসপাতালেই মৃত্যু হল বছর ষোলোর মেয়েটির। হায়দরাবাদে তরুণী পশুচিকিৎসককে গণধর্ষণের পরে খুন করে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে দেশকে। মেয়েদের নিরাপত্তা ফের উঠেছে একগুচ্ছ প্রশ্ন। হায়দরাবাদের আগেই উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলায় ঘটে গেছে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা। ধর্ষণের পরে নাবালিকার জ্যান্ত পোড়াতে চেয়েছিল তারই প্রতিবেশী। আধপোড়া শরীরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতদিন সেখানেই মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিল মেয়েটি। আজ সেই লড়াই শেষ হল।
ঘটনা গত ২১ নভেম্বরের। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর মেয়েটির উপর নৃশংস নির্যাতন চালায় তারই এক প্রতিবেশী। পরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। মেয়েটিকে যখন উদ্ধার করা হয় তার শরীরের অর্ধেকের বেশি পুড়ে গিয়েছিল। তবে প্রাণ ধরে রেখেছিল কোনও মতে। প্রথমে সম্বর জেলারই একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল মেয়েটির। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে। দীর্ঘ এক সপ্তাহ বাঁচার লড়াই চালিয়ে গিয়েছে নাবালিকা।
সম্বল জেলার নাখাসা থানা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকা। পুলিশ জানিয়েছে, বছর ষোলোর মেয়েটিকে প্রায়ই উত্যক্ত করত তার প্রতিবেশী জিশান। ঘটনার দিন মেয়েটি বাড়িতে একাই ছিল। সেই সুযোগে বাড়িতে ঢোকে জিশান। মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন চালায়। তারপর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে দেয়। নাবালিকার চিৎকারে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। তবে যতক্ষণে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয় তার শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছিল।
এএসপি অলোক জয়সওয়াল জানিয়েছেন, এলাকাবাসীর বয়ানের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় জিশানকে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইনে (এনএসএ) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দোষীকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।
হায়দরাবাদে তরুণী পশুচিকিৎসকের পোড়া দেহটা মাথা নত করেছে দেশের। যত নিরাপদ শহরের তকমাই জুটুক না কেন, দেশের যে কোনও প্রান্তেই রাতের শহর যে মেয়েদের জন্য কোনওভাবেই নিরাপদ নয় সেই প্রশ্নচিহ্নও এঁকে দিয়েছে ওই পোড়া শরীরটা। ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শামশাবাদ এলাকাতেই উদ্ধার হয়েছে বছর পঁয়ত্রিশের এক মহিলার দগ্ধ দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কি না সেটা বার করার চেষ্টা করছে পুলিশ।