বলুন আমি সর্বশক্তিমান, যা চাই করতে পারি! রাজ্যের উদ্দেশে কেন এই মন্তব্য হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির?

স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য একটিই মাত্র খেলার মাঠ। সেটিও নিয়ে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার! অভিভাবকদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে হওয়া মামলায় রাজ্য প্রশাসনকে বিঁধলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। তিনি বলেন, ‘‘বলুন না আমি সর্বশক্তিমান। আমি যা চাইব, তা করে দিতে পারি।’’ রাজ্য আদালতে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাতে না পারলে স্কুল নির্মাণে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ২ ব্লকের আখরিগঞ্জ হাই স্কুলের খেলার মাঠটি নিয়ে মামলা হয়েছে হাই কোর্টে। অভিভাবকদের করা মামলায় তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষও। অভিযোগ, স্কুলের তিন হাজার পড়ুয়ার জন্য একটিই মাত্র খেলার মাঠ রয়েছে। সেই মাঠের জমিটি এক জন দান করেছিলেন স্কুলকে। সেখানে সরকার আরও একটি স্কুল খুলতে চাইছে। এর ফলে স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা করে আর কোনও খেলার মাঠ থাকবে না। সেই মামলাটি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছে।

মামলাকারীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রাজ্যের বক্তব্য ছিল, জমিটি সরকারের। সেই জমিতে কী করা হবে, তা সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। রাজ্যের এই বক্তব্যের পরেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘অন্যের জায়গায় নতুন নির্মাণ! যা খুশি তাই করুন। স্কুলটি ভেঙে দিন। মানুষকে আর শিক্ষা দিতে হবে না। কেন মানুষকে শিক্ষা দেবেন?’’ রাজ্য আদালতে জানায়, খেলার মাঠটি থেকে স্কুলটি ১.৫ কিলোমিটার দূরে। তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি জানান, অনেক জায়গায় স্কুলের সঙ্গে খেলার মাঠ থাকে না। খেলার মাঠ হয়তো একটু দূরে থাকে। কোথাও কোথাও জায়গার অভাব থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, আগে একটি প্রাথমিক স্কুল ছিল। পরে সেটি হাই স্কুল হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘স্কুলটি সরকার পরিচালিত হওয়ার পরেও সরকার তার বিরোধিতা করছে। ক্ষমতা দেখানো হচ্ছে?’’

রাজ্য জানায়, খেলার মাঠের জমির পরিমাণ ১.৭৪ একর। ওই জমিতে তারা একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল খুলতে চাইছে। তার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি জানান, স্কুল করা যেতে পারে। কিন্তু খেলার মাঠের জমি ছেড়ে। তাঁর কথায়, ‘‘দু’টি স্কুলই হোক। দুই স্কুলের জন্য এক একর জমি খেলার মাঠের জন্য ছেড়ে দিন। জেনে আসুন কী করবেন? না হলে আমি ওই নির্মাণে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেব।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.