পুরীর মন্দিরে ইঁদুরের তাণ্ডব, বিগ্রহের পোশাক কেটে পালাচ্ছে মূষিক বাহিনী, বিপাকে কর্তৃপক্ষ

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ইঁদুরের উৎপাত দিন দিন বাড়ছে। রীতিমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে মূষিক বাহিনী। কিছুতেই তাদের বাগে আনা যাচ্ছে না। কখনও বিগ্রহের পোশাক কেটে, কখনও আবার পুজোর সময় উৎপাত করে পুরোহিতদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে তারা।

কোভিড অতিমারি এবং লকডাউনের সময় থেকে পুরীর মন্দিরে ইঁদুরের উৎপাত শুরু হয়েছে বলে দাবি কর্মচারীদের। লকডাউনের সময় দীর্ঘ দিন মন্দির চত্বরে ভক্তদের আনাগোনা বন্ধ ছিল। ফাঁকা মন্দিরে বংশবিস্তার করেছে মূষিক বাহিনী। তার পর অতিমারি কেটে গেলেও ইঁদুরদের তাড়ানো যায়নি মন্দির থেকে। বরং জগন্নাথের ডেরায় তাদের দাপট উত্তরোত্তর বাড়ছে।

ইঁদুরের দৌরাত্ম্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মন্দিরের পুরোহিতরা। তাঁরা জানিয়েছেন, মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ কাঠের তৈরি। ইঁদুর যদি তা-ও কেটে ফেলে, তাহলে বিপদ বাড়বে। সেবাইতরা জানিয়েছেন, বিগ্রহের পোশাক কেটে ফেলছে ইঁদুরেরা। গর্ভগৃহে পুজোর সময়েও তারা নানা রকম উৎপাত করছে হামেশাই। অবিলম্বে ইঁদুরের এই তাণ্ডব বন্ধ করা দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা।

সেবাইত বিজয়কৃষ্ণ পুষ্পালক বলেন, ‘‘আমরা ইঁদুরগুলিকে ধরে বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করছি। শুধু ইঁদুর নয়, মন্দিরে বিছেও রয়েছে। মন্দির থেকে তাদের বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি।’’

মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দেবতার উদ্দেশে উৎসর্গ করা ফুল খেয়ে ফেলে ইঁদুর। বিগ্রহের পোশাকও কেটে ফেলছে। কিন্তু মন্দিরের মধ্যে প্রাণীহত্যা নিষিদ্ধ। তাই ইঁদুরের বিষ দেওয়া যাচ্ছে না। ইঁদুর ধরে মন্দিরের বাইরে ফেলে আসেন কর্মচারীরা।

বস্তুত, মন্দিরে থাকলে ইঁদুরের খাবারের অভাব হয় না। জগন্নাথের প্রসাদের কিছু কিছু তারাও পেয়ে থাকে। ফলে মন্দির চত্বর ছেড়ে তারা বেরোতে চায় না। বাইরে ছেড়ে দিয়ে এলেও ফিরে আসে বার বার।

জগন্নাথ মন্দিরের পরিচালক জীতেন্দ্র সাহু অবশ্য জানিয়েছেন, ইঁদুর নিয়ে তাঁরা খুব একটা ভাবিত নন। এতে বেশি ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কাঠের বিগ্রহ নিয়মিত চন্দন এবং কর্পূর দিয়ে পরিষ্কার করা হয় বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.