বিরোধীদের তোলা অভিযোগের জবাব দিতে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্মরণ নিলেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যসভার ২৫০তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০৩ সালে অটলজি বলেছিলেন, রাজ্যসভা দ্বিতীয় কক্ষ (সেকেন্ড হাউস) হতে পারে তবে দ্বিতীয় স্তরের কক্ষ (সেকেন্ডারি হাউস) নয়। আমি আজ অটলজির সঙ্গে একমত এবং এর সঙ্গে যোগ করতে চাই যে জাতীয় উন্নয়নের জন্য রাজ্যসভারও সক্রিয় ও সহায়ক হয়ে উঠুক।” কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে একযোগে কাজ করতে তিনি আহ্বান করেন।
লোকসভায় সংখ্যাধিক্য পেয়ে সরকার এখন রাজ্যসভাকে গুরুত্বহীন করে দিতে চাইছে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে বিরোধী শিবিরে। সাধারণের ভোটে জিতে আসেন লোকসভার সদস্যরাই, তাই লোকসভার গুরুত্ব বাড়িয়ে রাজ্যসভার গুরুত্ব সরকার কমাতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠছে। এদিন তারই জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন আম্বেদকরের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নেতারা এই কক্ষ থেকে আমাদের দেশকে কী দিয়েছেন তার উজ্জ্বল উদাহরণ হলেন বাবাসাহেব আম্বেদকর। কোনও বিশেষ কারণে তিনি লোকসভায় বসতে পারতেন না, কিন্তু রাজ্যসভা তাঁর কাজ দেখেছিল।” আম্বেদকরের প্রসঙ্গ টানেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও।
রাজ্যসভাই যে সাংবিধানিক পদ্ধতির ভারসাম্য রক্ষা করে, সে কথা উল্লেখ করে মনমোহন সিং বলেন, “কোনও আইন যাতে তাড়াহুড়ো করে অনুমোদন করে দেওযা না হয় এবং আবেগের বশে করা না হয়, সেটা নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য।” মনমোহন সিং নিজে রাজ্যসভার সদস্য হিসাবেই প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
গত অধিবেশনে বেশ কয়েকটি বিল খুব দ্রুত পাস করিয়ে নেয় সরকার। তিরিশটির কাছাকাছি বিল পেশ করা হয়েছিল যা রেকর্ড। সম্ভবত সেই কথাই মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এবারেও নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করাতে চায় সরকার। তাকেও ইঙ্গিত করে থাকতে পারেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদব বলেন, শুধুমাত্র লোকসভার সঙ্গে গলা মেলানো রাজ্যসভার কাজ নয়। তিনি বলেন, “যদি রাজ্যসভার সদস্যরা নিষ্ক্রিয় থাকেন তা হলে রাজ্যসভা গুরুত্বহীন কক্ষই হয়ে পড়বে। লোকসভায় যা হচ্ছে স্রেফ তাতে সায় দিয়ে যাওয়া আমাদের কাজ হতে পারে না।” তার পরেই তিনি বলেন, “যেই প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতা শেষ করলেন তখনই বিজেপির অর্ধেক সদস্য কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন, এইভাবেই কি আমরা মানুষকে সম্মান করতে শিখব?”