দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাত মাসের বেশি সময়ের আইনি টানাপড়েনের শেষ হতে পারে আজ, শুক্রবার। এ দিন দুপুরে চিটফান্ড কাণ্ডে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার ও কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি সিবিআই মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মধুমতী মিত্রর এজলাসে মঙ্গলবার শেষ হয়েছিল রাজীব মামলার শুনানি। সে দিন রায়দান স্থগিত করে দিয়েছিল আদালত। আজ তা ঘোষণা হওয়ার কথা।
চিটফান্ড তদন্তে রাজ্য সরকার যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট গঠন করেছিল, তার প্রধান ছিলেন তৎকালীন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার রাজীব। সিবিআইয়ের অভিযোগ ছিল, সিটের মাথা হিসেবে রাজীব কুমার তথ্যপ্রমাণ লোপাটে সাহায্য করেছেন। কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্তভার নেওয়ার পর যে যে তথ্য সিটের থেকে চেয়েছিল, তা দেওয়া হয়নি। আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে।
গত বছর নভেম্বর থেকেই সিবিআই তলব করছিল রাজীবকে। কিন্তু তিনি যাননি। এর পরে তা ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছয় চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে। সিবিআইয়ের বিরাট টিম হানা দেয় লাউডন স্ট্রিটে রাজীবের বাংলোয়। কলকাতা পুলিশ ব্যারিকেড করে আটকে দেয় সিবিআই-কে। কলার ধরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয় শেক্সপিয়র সরণি থানায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছুটে যান রাজীবের বাড়ি। তারপর বসে পড়েন ধর্নায়।
রাজীব মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টে। তিন দিন শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট বলে, রাজীবকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। কিন্তু তাঁকে জেরায় সহযোগিতা করতে হবে। এরপর মেঘালয়ের রাজধানী শিলং-এ টানা পাঁচ দিন রাজীব কুমারকে জেরা করে তদন্ত এজেন্সি। গত মে মাসে রাজীবের উপর থেকে রক্ষাকবচ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। বারাসত আদালতে মামলা করেন রাজীব। কিন্তু বারাসত স্পেশাল কোর্টে পদ্ধতিগত ত্রুটির জন্য তাঁর পিটিশন খারিজ হয়ে যায়। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই আইপিএস। সেই মামলারই রায় আজ।
গত বারো-তেরো দিনের টানা সওয়াল জবাবে সরগরম হয়েছে আদালত। সিবিআই একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছে রাজীবের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির অভিযোগের নিশানায় ছিল রাজীবের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নাও। শেষ কয়েকদিন শুনানি হয় ‘ইন ক্যামেরা’ অর্থাৎ গোপনে। এখন আদালত কী রায় দেয় সে দিকেই চোখ বাংলার রাজনীতির।