অযোধ্যা রায়ে, রাজ্যের শান্তি যেন বিঘ্নিত না হয়, বার্তা যোগীর

শনিবারেই বহু প্রতীক্ষিত অযোধ্যা মামলার রায় দিতে চলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আর এই রায় দানের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুরই শোনা গেল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের গলায়। রায়দান যাইহোক না কেন রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন যোগী।

শুক্রবারই নরেন্দ্র মোদী টুইট করে জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়কে যেন ‘হার-জিতের’ আঙ্গিকে না দেখা হয়। এর সঙ্গেই উত্তরপ্রদেশ-সহ গোটা ভারতে শান্তি বজায় রাখার বার্তাও দেন।

একই ভাবে রাজ্যে শান্তির পরিবেশ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেই বার্তাই দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।

এই প্রসঙ্গে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘রাজ্যে যদি কোনও গোষ্ঠী বা ব্যক্তি শান্তি বিঘ্ন করার চেষ্টা করে তবে তা দমনে কঠোর অবস্থান নেবে রাজ্য সরকার।’

পাঁচ বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আগামিকাল অর্থাৎ শনিবারই ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় দেবে। আর এই রায়দানকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অশান্তি না হয় তাই গোটা অযোধ্যাকে ঘিরে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে।

গত ১৬ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চে অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি শেষ হয়। তবে সে সময় কোনও রায় ঘোষণা করেনি সর্বোচ্চ আদালত।

এদিকে, আগামী ১৭ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তার আগে এই মামলার রায়দান হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যেই রাতে সেই মতো প্রশাসনিক মহলে সমস্ত ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্র কুমার তিওয়ারি এবং পুলিশ প্রধান ওম প্রকাশ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি গগৈ। এই জল্পনার মধ্যেই এদিন রাতে অযোধ্যা মামলায় রায় ঘোষণার দিনক্ষণ ঘোষণা করা হল।

এদিকে, অযোধ্যার আশপাশে অনেক গ্রামেই এখন উড়তে শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ ড্রোন। ৩০টি বম্ব স্কোয়াড চলে গিয়েছে বৃহস্পতিবার রাতেই। অযোধ্যার অধিকাংশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি৷ চলবে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সেখানে চার হাজার আধা-সামরিক বাহিনীর জওয়ান পাঠিয়েছে৷ সেই সঙ্গে ষোলো হাজার পুলিশকর্মী৷

থমথমে শহরের অনেকে অশান্তির ভয়ে আগে থেকেই বাড়ির শিশু ও মহিলাদের সরিয়ে দিয়েছেন অন্যত্র। কেউ কেউ আবার চাল-ডাল-সব্জি বাড়িতে মজুত করে রাখছেন। তাঁরা বলছেন, সাবধানের মার নেই। ১৯৯২-এর স্মৃতি এখনও টাটকা। ২০১০-এরও। তাই কোনও ঝুঁকি তাঁরা নিতে পারবেন না। পরিবার আগে। পরে আর সব কিছু।

সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে কোনও পোস্ট দেওয়া নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন অযোধ্যার জেলাশাসক। আশপাশের প্রতিটি গ্রামে ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে৷ তাঁরা নিরন্তর পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন৷ কোনও রকম উত্তেজক অবস্থা হলে তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানাবেন৷ সাম্প্রদায়িক দিক থেকে স্পর্শকাতর এলাকায় অনেক বেশি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.