‘আমাদের ভ্যাকসিন যাঁরা নিয়েছিলেন, তাঁদের একজন অজ্ঞাত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই আমরা আপাতত কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বন্ধ করে দিচ্ছি।’ সোমবার বিবৃতি দিয়ে এমনই জানিয়েছে ওষুধ নির্মাতা সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, ফেজ থ্রি এনসেম্বল ট্রায়ালও বন্ধ করে দেওয়া হল।
জনসন অ্যান্ড জনসন জানিয়েছে, যে কোনও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সিরিয়াস অ্যাডভার্স ইভেন্ট হয়। অর্থাৎ ভ্যাকসিন নিয়ে গুরুতর অসুস্থতার ঘটনা ঘটে। বিশেষত বহু সংখ্যক ব্যক্তির ওপরে পরীক্ষা চালাতে গেলে এমনটা ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
জনসন অ্যান্ড জনসনের ফেজ থ্রি ট্রায়াল শুরু হয়েছিল সেপ্টেম্বরের শেষে। কোম্পানির পরিকল্পনা ছিল আমেরিকা সহ বিশ্ব জুড়ে ২০০ জায়গায় পরীক্ষা চালানো হবে। ভ্যাকসিন দেওয়া হবে ৬০ হাজার জনকে।
আমেরিকা বাদে অপর যে দেশগুলিতে জনসন অ্যান্ড জনসনের ফেজ থ্রি ট্রায়াল চালানোর কথা ছিল, তার মধ্যে আছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, পেরু এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
সেপ্টেম্বরের শেষে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষার পরে আশার কথা শুনিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। ওই সময় তাদের প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার ফল বার হয়। তাতে বলা হয়, এডি২৬.কোভ২.এস নামের এই ভ্যাকসিনের দুটি আলাদা ডোজ দেওয়া হয়েছে। তাতে ফল ভাল মিলেছে। একটি ডোজ ও দু’টি ডোজের মধ্যে কী তফাত হচ্ছে তা পরীক্ষা করে দেখছে মোডের্না ও ফাইজার নামের দুটি কোম্পানি। অবশ্য এখনও এটা পরিষ্কার নয় যে জনসন অ্যান্ড জনসনের এই ভ্যাকসিন অল্প বয়স্কদের শরীরে যতটা কার্যকর হবে ততটাই বয়স্কদের শরীরে হবে কিনা।
জুলাই মাসে জনসন অ্যান্ড জনসনের এই ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়। প্রথমে বাঁদরদের শরীরে তা প্রয়োগ করা হয়। সেখানে ভাল ফল পাওয়ার পরে আমেরিকার প্রায় হাজার জন তরুণ-তরুণীর শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে দেখা হচ্ছে। তাতে প্রাথমিক ট্রায়ালে ভালই ফল দেখা গিয়েছে বলে দাবি সংস্থার।
জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের কাজে নিযুক্ত গবেষকরা জানিয়েছেন, ৯৮ শতাংশ ভলান্টিয়ারের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। সেই অ্যান্টিবডি ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৯ দিন পরে এই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। অবশ্য ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষদের মধ্যে মাত্র ১৫ জনের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা অনেকটাই কম।