ইংল্যান্ডকে এক ইনিংস ও ২৫ রানে বিধ্বস্ত করে টেস্ট সিরিজ জিতল ভারত

 চতুর্থ টেস্টে বিরাট জয় ভারতের । ইংল্যান্ডকে এক ইনিংস ও ২৫ রানে বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতল ভারত। স্পিনারদের দাপটে সিরিজের শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস শেষ হয়েছিল ২০৫ রানে। এরপর ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রানে অল-আউট হয়ে যায় ভারত । সুতরাং প্রথম ইনিংসের নিরিখে ১৬০ রানের বড়সড় লিড পেয়ে যায়  ভারতীয় দল ।  এরপর ব্যাট করতে নেমে ফের অক্ষর-অশ্বিনের স্পিনে আত্মসমর্পণ করে ব্রিটিশ ব্রিগেড । প্রথম ইনিংসে চার উইকেট পাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেলেন অক্ষর প্যাটেল। অন্যদিকে, দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিনও পেলেন পাঁচ উইকেট।  দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড অল-আউট হয়ে যায় ১৩৫ রানে। ফলে ভারত এক ইনিংস ও ২৫ রানের ব্যবধানে চতুর্থ টেস্ট জিতে যায়। এই জয়ের ফলে চার টেস্টের সিরিজ ৩-১ ব্যবধানে পকেটে পুড়ল ভারত। সেই সঙ্গে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকিটও নিশ্চিত করেন কোহলিরা।

প্রথম দিনই ২০৫ রানে শেষ হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের ইনিংস। তবে ব্যাট করতে নেমে বিপাকে পড়ে গিয়েছিল ভারতও। দ্বিতীয় দিনে ঋষভ পন্তের সেঞ্চুরির পর মোতেরায় তৃতীয় দিনের শুরুতে দুরন্ত ব্যাট করলেন ভারতের ওয়াশিংটন সুন্দর ও অক্ষর পটেল। অক্ষর ৪৩ করে রানআউট হন। অন্যদিকে ৯৬ করে অপরাজিত থাকলেন সুন্দর। অপর প্রান্তে এক ওভারে ইশান্ত শর্মা ও মহম্মদ সিরাজ আউট হয়ে যাওয়ায় টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি হল না তাঁর। ৩৬৫ রানে ভারত অলআউট হওয়ায় ১৬০ রানের বিশাল লিড পায় ভারত। পিচ দেখে মনে হচ্ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে অন্তত কিছুটা ব্যাট করতে পারবে ইংল্যান্ড। কিন্তু কোথায় কী? তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপ। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলেই জ্যাক ক্রলিকে ফেরালেন অশ্বিন। পরের বলেই বেয়ারস্ট তাঁর শিকার হন। ডমিনিক সিবলিকে আউট করে নিজের খাতা খোলেন অক্ষর। স্টোকসও তাঁর শিকার হন। চারজনের কেউই দুই অঙ্কের সংখ্যায় যেতে পারেনি। রুট ইনিংস ধরার চেষ্টা করেন। সঙ্গে ছিলেন ওলি পোপ। একটা পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে। কিন্তু ৩০ রানের মাথায় রুটকে এলবিডব্লিউ করে ইংল্যান্ডের শেষ আসাও শেষ করে দেন অশ্বিন। প্রথম ইনিংসে ভাল খেলা ড্যানিয়েল লরেন্স দ্বিতীয় ইনিংসেও ভাল খেললেন। তিনিই একমাত্র ইংলিশ ব্যাটসম্যান যিনি দুই স্পিনারকে ভাল সামলালেন। লরেন্সের সঙ্গে পোপ ও ফোকস কিছুটা ধরার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রান পাননি ডমিনিক বেসও। তিনজনকেই আউট করেন অক্ষর। চলতি সিরিজে চারবার পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। ভারতের হয়ে অভিষেক সিরিজে সবথেকে বেশি উইকেট শিকারি হলেন অক্ষর। লরেন্স হাফসেঞ্চুরি করলেও বাকিরা কেউ দাঁড়াতে পারেননি। ১৩৫ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। তার ফলে ইনিংস ও ২৫ রানে ম্যাচ জেতে ভারত। ভারতের হয়ে অক্ষর ও অশ্বিন ৫টি করে উইকেট নেন। তৃতীয় দিনেই শেষ হয়ে গেল আরও একটা টেস্ট।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চলতি সিরিজটি যেন অস্ট্রেলিয়া সিরিজেরই পুনরাবৃত্তি। ডনের দেশে প্রথম টেস্ট হেরেও পরবর্তী তিন টেস্টের মধ্যে দু’টি জিতে সিরিজ পকেটে পুরেছিল টিম ইন্ডিয়া। তাও আবার ভাঙাচোরা দল নিয়েই। তারপর এই সিরিজেও প্রথম টেস্ট হেরেছিল ভারত। কিন্তু পরবর্তী তিনটি টেস্ট সহজেই জিতে নিলেন বিরাটরা। এই ম্যাচ শুরুর আগেই যাবতীয় পরিসংখ্যান পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেতে জয় কিংবা নিদেনপক্ষে ড্রয়ের দরকার ছিল টিম ইন্ডিয়ার। তবে ড্র নয়, ম্যাচের প্রথম দিন থেকেই জয়ের জন্য ঝাঁপিয়েছিলেন অশ্বিন-রাহানেরা। আর ম্যাচের রাশও ছিল তাঁদের হাতেই। সেই সঙ্গে এই ম্যাচের পাশাপাশি ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। জুলাইয়ে লর্ডসে কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বের সেরা টেস্ট দল হওয়ার লড়াইয়ে নামবেন কোহলিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.