মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন দেবেন্দ্র ফডণবীশ। মহারাষ্ট্রে মহানাটকে দুপুরেই মোচর দিয়ে মঙ্গলবার দুপুরেই উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন অজিত পাওয়ার। এরপর থেকেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন বাড়ছিল তবে কি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন দেবেন্দ্র ফডণবীশ। বেলা সাড়ে তিন’টের সময় একটি সাংবাদিক সম্মেলন ডাকেন ফডণবীশ। এই সম্মেলন থেকেই তিনি জানান সম্মেলন শেষেই রাজভবনে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দেবেন তিনি। পদ ছাড়ার আগে অবশ্য শিবসেনা এবং এনসিপি দুই দলকেই কটাক্ষ করেছেন ফডণবীশ।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিধানসভার জনাদেশে আমাদের সংখ্যা শিবসেনার থেকেও বেশি ছিল। কিন্তু, জোট করার ক্ষেত্রে আমাদের সমস্যা হয়েছিল। মহারাষ্ট্রের জনগণের কথা মাথায় রেখে আমরা এই সরকার গড়েছিলাম।’
নিজের ইস্তফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যখন এনসিপি আমার কাছে এসেছিল। আমি ভেবেছিলাম গোটা এনসিপি বিজেপির সঙ্গে আছে। আজ অজিত পাওয়ার যখন ইস্তফা দিয়ে দিলেন আমাদের আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা রইল না। তাই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই আমি ইস্তফাপত্র রাজ্যপালের কাছে জমা করব।’
এরপরেই শিবসেনার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ফডণবীশ। ভোটের ফল বেরনোর পরেই শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়তে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রীত্বের জন্য অনড় ছিলেন। এই প্রসঙ্গে এ দিন তিনি বলেন, ‘ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই শিবসেনা আমাদের শাসাচ্ছিল। আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রীত্ব পদের দাবিও করেন উদ্ধব। কিন্তু অমিত শাহ এইরকম কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি।’ সরকার গড়ার ক্ষেত্রে বিজেপি সবরকমের চেষ্টা করেছিল বলে জানান ফডণবীশ।
হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার আদর্শ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দেবেন্দ্র ফডণবীশ। তিনি বলেন, ‘একসময়ে শিবসেনা হিন্দুত্ববাদি দল ছিল। এখন তো ওদের আদর্শ সোনিয়া গান্ধীর পায়ে সমর্পিত রয়েছে।’
ইস্তফা দেওয়ার আগে কংগ্রেস-শিবসেনা-এনসিপিকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি ফডণবীশ। তিনি বলেন, ‘একটা অটোরিক্সার তিনটে চাকা থাকে। এই জোট সরকারেও তিনটে আদর্শ রয়েছে। এবারে তিনটে চাকা তিন দিকে গেলে আপনারাই বুঝে যান কী হতে চলেছে।’
মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়ার পর গত ২৩ অক্টোবর কার্যত নিঃশব্দে অজিত পাওয়ারকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফডণবীশ। এই ঘটনা সামনে আসতেই বিজেপির এই সরকারকে ‘অবৈধ’ বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে যায় কংগ্রেস-শিবসেনা-এনসিপি। বুধবারে আস্থা ভোটের মাধ্যমে বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। কিন্তু তার আগেই দেবেন্দ্র ফডণবীশ সরে দাঁড়াতে কংগ্রেস-শিবসেনা-এনসিপি এই ত্রয়ী জোট সরকারের শপথ নেওয়া এখন শুধু সময়ে অপেক্ষা।